গভর্নেস
ঘড়িতে তখন রাত বাজে প্রায় ১২টা। সদরঘাটের কুমিল্লাগামী জাহাজ (স্টিমার) নোঙর তুলি তুলি করছে। ওদিকে স্টিমারের কেবিনে বসে সালমা কেঁদেই চলেছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ‘অই সালমা, কানতাছ ক্যালা? আয় হায়, দেখছ? চোখ দুইটা এক্কেরে জবা ফুলের লাহান লাল অইয়া গেছে। আর কাইন্দো না মা, আর কাইন্দো না, আমি আছি না লগে? কোনো ডর নাই। আয় হায়! নতুন জামাই কইব কী?’ ময়নার মায়ের এ মমতাভরা কথাগুলো শুনে সালমা আরও ডুকরে কেঁদে উঠল।
১৯৪৭ সাল কেবল ফেব্রুয়ারি মাস এল। প্রায় ২০০ বছর রাজত্বের পর ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঠিক প্রাক্কালের ঢাকা শহর। হালকা শীতের মিষ্টি আমেজ তখনো পুরোপুরি আবহাওয়াকে ছেড়ে যায়নি। ষোড়শী সালমা আজ শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে প্রথমবারের মতো। কুমিল্লার এক বর্ধিষ্ণু গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ি। মাত্র বিয়ে হয়েছে সুদর্শন রাজপুত্রের মতো দেখতে ২৬ বছর বয়সের সাহাবুদ্দিনের সাথে। হাতে মেহেদির রং, গায়ে অলংকার, পরনে সোনালি রঙের টিস্যু বেনারসি, উপটানের সুগন্ধে ম–ম করছে নব যৌবনের রূপসী সোনার অঙ্গ তার। সাহাবুদ্দিন তার নতুন বউ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। সঙ্গে যাচ্ছে তার একপাল শালা–শালী। আপন শালা–শালীর সাথে চাচাতো, ফুপাতো, খালাতো, মামাতো সব মিলিয়ে প্রায় গোটা তিরিশেক। আর সাথে যাচ্ছে সালমার আয়া ময়নার মা।
স্টিমারের পুরোটা ফার্স্ট ক্লাস কেবিন রিজার্ভ করে ঢাকা থেকে নদীপথে চলেছে সবাই কুমিল্লার ঘাটে। সেখানে সাজানো পালকি অপেক্ষা করে আছে নতুন বউকে বাড়ি নিয়ে যেতে। সারাটা পথ সবাই মিলে খুবই মজাতে উপভোগ করতে যাচ্ছে শুধু সালমা ছাড়া। এক অজানা ভয় আর উৎকণ্ঠা যেন তার বুকের ভেতরে বাসা বেঁধে আছে। বিয়েবাড়ির হুলুস্থুলে আর শরমের মরমে ভালো করে সে তাকিয়েও দেখেনি তার নতুন বরকে। এরই মধ্যে আবার অচেনা শ্বশুরবাড়ি যাত্রা! এ যেন একসাথে অনেকগুলো চাঞ্চল্যকর ঘটনা আর বুক দুরু দুরু করা এক অজানা আনন্দ–ভীতি মেশানো তেঁতো–মিষ্টি পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে সে।
ভাইবোনেরা স্টিমারে ছোটাছুটি করছে, ছোটরা ঘুমিয়ে পড়েছে, বাকিরা খাবারদাবার খাচ্ছে আর আনন্দ–কোলাহলে মেতেছে। আবার ময়নার মায়ের গলা শুনতে পেল সালমা, ‘অই আসিপ (আসিফ), এত ডুষটামানি (দুষ্টুমি) করো ক্যালা? আয় হায়! অরা কী কইব, অরা তো কইব শহুইরা কাউয়াগিনি (শহরের কাকগুলো) আইছে।’ ময়নার মায়ের আওয়াজটা কানে যেতেই একটু যেন আশ্বস্ত হলো সে। যাক তবু তো ময়নার মা সাথে আছে। এ ময়নার মা শিশুকাল থেকেই সালমাকে লালনপালন করেছে। দেখতে খুবই সুন্দরী। ছোটখাটো হালকা–পাতলা গড়ন। গায়ের রং ছিল মেমসাহেবদের মতো ফরসা। আর তাই তার পান খাওয়া লাল ঠোঁট দুটো ওই টুকটুকে ফরসা মুখে আরও বেশি লাল মনে হতো।
ঢাকা শহরে জন্ম ও বড় হওয়া মেয়ে সালমা। তারা পুরান ঢাকায় বসবাস করত। ভারতবর্ষ ভাগের আগে সেই সময় এই পুরান ঢাকাই ছিল পূর্ব বাংলার অন্যতম শহর। বাবা ছিলেন কলেজের অধ্যাপক। যে মেয়ে জীবনে কোনো দিন গ্রামে যায়নি, আজ বধূবেশে প্রথমবারের মতো গ্রামে যাত্রা...বুকটা যেন কেমন ঢিপ ঢিপ করতে লাগল। যদিও মাত্র দুই দিনের জন্য তবু ভাবতে গিয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। কী করে যে কাটবে এই দুটো দিন...।
রাতের অন্ধকার তখনো পুরোপুরি সরে যায়নি। ভোরের আবছা আলোয় সালমা দেখতে পেল স্টিমার প্রায় পৌঁছে গেছে ঘাটে। আধা মাইল দূর থেকে স্টিমার তার ভোঁ ভোঁ শব্দের বিরাট ভেঁপু বাজিয়ে আর ফ্ল্যাশলাইট দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছিল নববধূর আগমনবার্তা। সাথে সাথে ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের ভিড় মেতে উঠেছিল সানাই আর ঢোলের তালে তালে আনন্দনৃত্যে। মনে হচ্ছিল, গ্রামের কোনো ছেলে–পুরুষ আর বাদ ছিল না। সবাই এসেছিল সাহাবুদ্দিনের নতুন বউকে বাড়ি নিয়ে যেতে। ভীরু মনে দুরু দুরু বুকে মৃদু পায়ে সাজানো পালকিতে উঠে বসল সালমা। সানাই আর ঢোলের তালে তালে চার বেহারা ছুটে চলেছে...সঙ্গে চলেছে বিরাট কাফেলা। পালকি যখন সদর দুয়ারে পৌঁছাল, ততক্ষণে সালমার জীবনের নতুন দিনের নতুন সূর্য প্রায় উঠি উঠি করছে। সে কী দৃশ্য! সারা গ্রাম যেন ভেঙে পড়েছে কৌতূহলে শহরের বউ দেখতে, বউ ঘরে তুলতে।
হাসি–আনন্দে ভরপুর অনেক রকম মেয়েলি আচার–অনুষ্ঠান ও রীতিনীতি সম্পন্ন করার সময় যেটা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল, তা ছিল ননদ–ভাবিরা আর গ্রামের বউ-ঝিয়েরা মিলে উঠানে কিছু মাটির প্রদীপ রেখে তার ওপর আলপনা আঁকা শীতল পাটি বিছিয়ে দিয়েছিল। নতুন বর সাহাবুদ্দিন তাঁর নতুন বউকে কোলে তুলে নিয়ে সেই শীতল পাটির ওপর দিয়ে হেঁটে ঘরে তুলেছিল। ব্যাকব্রাশ করা মাথাভর্তি ঢেউ খেলানো কালো চুল, টকটকে ফরসা গায়ের রং, ছয় ফুট লম্বা নওজোয়ান সাহাবুদ্দিনের চওড়া বুক ও বলিষ্ঠ বাহুর উত্তাপে সালমা যেন মোমের পুতুলের মতো গলে গলে যেতে লাগল।
নতুন বরের পায়ের চাপে পাটির তলায় রাখা সেই প্রদীপগুলো ভেঙে টুকরা হয়ে গেল। তারপর বউ–ঝিয়েরা মিলে সেই প্রদীপের টুকরাগুলো গুনতে বসল। যতগুলো টুকরা হলো, নবদম্পতি নাকি ঠিক ততজন সন্তানসন্ততির জনক–জননী হবে, এ ছিল তাদের ভবিষ্যদ্বাণী! আর এই নিয়ে বিয়েবাড়িতে খুব একচোট হাসিঠাট্টার বন্যা বয়ে গেল। কাচারি ঘরের উঠানে তখনো চলছে ঢোলের তালে তালে ঢুলিদের নাচ আর সানাইয়ের মধুর সুর...। তারপর সারা দিন বিয়েবাড়ি মেতে উঠেছিল আনন্দ–কোলাহলে। বউ–ঝিয়েরা ব্যস্ত সবাই রান্নাবান্না আর নানান পদের পিঠা–পায়েস তৈরি করতে। রাতের খাবারের পর উঠানে বসেছিল পুঁথিপাঠের আসর। তারপর একসময় ক্লান্ত হয়ে বিয়েবাড়ি ঢলে পড়ল ঘুমের কোলে।
পরদিন ভোরবেলায় শালা–শালীর দল ঘুম ভেঙে ঢালা বিছানাতেই কলকাকলিতে মেতেছে...তাদের বেড টি চাই। বেড টি ছাড়া তারা বিছানা ছাড়বে না। ‘অই পোলাপাইন, তোমরা পাইছ কী? তোমরা কি আজকা উঠবা না? দেখছ? তোমগো লাইগ্যা বেড টি লইয়া আইছে। জলদি উঠো, নাইলে চা ঠান্ডা অইয়া যাইব।’ সালমা শুনতে পাচ্ছে ময়নার মা সবাইকে তাড়া দিচ্ছে উঠতে। আজ আর মনটা তার অত খারাপ নয়, বরং ভালোই লাগছে গ্রামের এই পরিবেশ, দেবর–ননদদের হাসিঠাট্টা, নানা অজুহাতে নতুন বরের বারবার নতুন বউয়ের ঘরে আসা–যাওয়া—সবকিছু যেন এক অজানা ভালো লাগায় ভরে আছে।
নানান পদের পিঠা–পায়েস, দই–চিড়া আর ফলমূল দিয়ে সকালের নাশতা শেষ হতেই নতুন দুলাভাই তার দলবল নিয়ে মেতে উঠল শালা–শালীদের সাথে উঠানে রং খেলার আনন্দে। তারপর পুকুরে দাপাদাপি...বলিষ্ঠ নওজোয়ান সাহাবুদ্দিনের সাথে ওই অল্পবয়সী ছোকরাগুলো কিছুতেই যেন পেরে উঠতে পারল না। একেকজনকে ধরে ধরে পুকুরে চুবানি দেওয়ার সে দৃশ্যও সবাই মিলে খুব উপভোগ করল। তারপর দুপুরের খাবার। ঘরজুড়ে ফরাসের ওপর দস্তরখানা বিছানো হয়েছে আর তাতে রয়েছে নানান পদের মুখরোচক খাবার। সবশেষে সবাই পায়েস খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ল...এ যেন একের পর এক বিরামহীন আনন্দ...। দেখতে দেখতে এ হাসিখুশিভরা দিন দুটো কেটে গেল। সালমার বড় ভাই এলেন অনেক মিষ্টি সঙ্গে করে মেয়েজামাইকে ফিরানি নিয়ে যেতে। আবার একইভাবে সবাই ফিরে এল সদরঘাটে ঢাকা শহরের বুকে।
সালমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে তাই ময়নার মায়েরও আর বিশেষ কোনো কাজ রইল না সে বাড়িতে। তাই সে মোটামুটি অবসর নিল। কিন্তু হলে কি হবে, তার প্রিয় সালমাকে সে তো কিছুতেই ভুলে থাকতে পারে না। তাই সময়ে সুযোগে সব সময়ই সে সালমার সংসারে বেড়াতে এসেছে। সারা দিন কাটিয়ে বিকেলে ফিরেছে। এ রকম বেড়াতে আসার সময় সে প্রায়ই তার ছেলের ঘরের নাতি ফজলুকে সঙ্গে করে নিয়ে আসত। ফজলু তখন স্কুলে পড়ত, বয়স হবে সাত কি আট বছর। ময়নার মা বেশ গর্ব করে বলত, ফজলু পড়াশোনায় খুবই ভালো। যখনই বেড়াতে এসেছে, সালমা আর সাহাবুদ্দিন দুজনই ওকে অনেক আদর–যত্ন করেছে। যাওয়ার সময় টাকাপয়সা অথবা উপহার দিয়েছে। সাহাবুদ্দিন খুবই বন্ধুবৎসল মানুষ ছিলেন। যখনই ময়নার মা ফজলুকে নিয়ে বেড়াতে আসত, তার সাথে সাহাবুদ্দিনের খুব তাড়াতাড়ি বন্ধুত্ব হয়ে যেত। ‘দেখছ? ক্যামনে দুলামিয়ার লগে দোস্তি করতাছে? দোয়া কইরেন দুলামিয়া, যানি এইটারে ল্যাখাপড়া সিকাইয়া মানুষ করবার পারি।’ দুলামিয়া হেসে জবাব দিতেন, ‘হবে, হবে, ভালো মানুষ হবে। এই নাতিটি তোমার ভীষণ স্মার্ট।’ এভাবে ময়নার মায়ের আসা–যাওয়া চলছিল। প্রায় সব সময়ই ফজলু তার সাথে আসত।
বেশ কয়েক বছর পর দেখা গেল যে ময়নার মা একাই আসে, নাতিটি আর আসে না সাথে। সালমা একদিন জিজ্ঞাসা করল, ফজলু আর আসে না কেন? ময়নার মা তার পান–দোক্তা খাওয়া লাল ঠোঁটে হেসে জবাব দিল, ‘শরম পায়, অহনকা তো একটু বড় অইছে, শরমায়’। সালমা বুঝে নিল যে ফজলু বুঝতে পেরেছে, তার দাদি সালমার আয়া ছিল, সেই সংকোচেই সে আর আসে না। বয়ঃসন্ধিকালের এই সংকোচ বোধ হয় তার আত্মসম্মানকে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছিল। তারপর কালের চাকার সাথে সাথে সালমার জীবনের চাকাও ঘুরতে ঘুরতে তখন যে পর্যায়ে এসে পৌঁছেছিল, তা ছিল তখন সে ছয় সন্তানের জননী এবং একটি নাতনির নানি। ময়নার মা বহুদিন আগেই তার জীবন থেকে মুছে গেছে। হঠাৎ তার আসা বন্ধ হয়ে গেল, খবর এল যে সে অসুস্থ। তারপর আবার খবর এল, সে এ পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছে। অবসর মুহূর্তে ময়নার মায়ের স্মৃতিগুলো মাঝেমধ্যেই সালমার মনকে নাড়া দিয়ে যায়।
কিশোরী সালমার মাথায় ঘন লম্বা চুল ছিল হাঁটু অবধি। কিছুতেই সে নিজে সেই ঘন চুল ধুয়ে উঠতে পারত না, হাতব্যথা হয়ে যেত। মা অথবা ময়নার মাকেই এই কাজ করতে হতো। চুল ধোয়া, চুল শুকানো, তাতে তেল দিয়ে আঁচড়ানো, বেণি বাঁধা, বেণিতে সুন্দর সুন্দর রঙিন ফিতে দিয়ে ফুল করে দেওয়া—এ কাজগুলো বেশির ভাগ সময় ময়নার মা–ই করত। শিশুকালে সালমা দুধের বোতলে দুধ খেতে চাইত না। এ ময়নার মা কত যে কষ্ট করে কোলে নিয়ে চামচ দিয়ে ওকে দুধ খাওয়াত, সেই গল্প সে বহুবার করেছে সালমার ছেলেমেয়েদের কাছে। ‘তোমার মায় এমুন জিদ্দি আছিল, দুদ খাইবার চাইত না, আমার হাতে দুদের বাটি দেকলেই চিক্কর পাড়ন শুরু কইরা দিত।’ মনে পড়ে গেল, সালমা যখন নতুন সংসার করতে যাবে। ঢাকার বাইরে ছোট একটি উপশহরে সাহাবুদ্দিনের কর্মস্থল। মা এবারও ময়নার মাকে সাথে দিলেন। যাওয়ার পথে ফেরিঘাট থেকে বড় বড় দুটো ইলিশ মাছ কিনে নিল সাহাবুদ্দিন। নতুন সংসারে সেই মাছ দুটো ময়নার মা কয়েক পদে খুবই মুখরোচক করে রান্না করেছিল। রান্নাঘরে সালমা ওকে সঙ্গ দিতে চাইলে সে তার পান খাওয়া লাল ঠোঁটে হেসে বলেছে, ‘না না, আমি একলাই পারুম, তুমি যাও দুলামিয়ার লগে গল্প কর গিয়া, বেচারা একলা একলা পায়চারি করতাছে।’ এমনি আরও বহু স্মৃতি।
আরও বেশ কিছু বছর পরের কথা, এক শীতের দিনের পড়ন্ত বিকেলে সালমা ও সাহাবুদ্দিন বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিল। হঠাৎ দারোয়ানের গেট খোলার এবং গাড়ি ঢোকার শব্দ এল কানে। কিছুক্ষণ পর কাজের ছেলেটি এসে জানাল, কেউ এসেছে সালমার সাথে দেখা করতে। তারা দুজনই বসার ঘরে এল কিন্তু আগন্তুককে কেউই চিনতে পারল না। ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি উঠে এসে প্রথমে সালমাকে ও পরে সাহাবুদ্দিনকে পা ছুঁয়ে সালাম করলেন। তারা দুজনই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ভদ্রলোকের মুখের পানে চেয়ে আছেন...তারপর, ‘ফুফু, আমাকে চিনতে পারলেন না? আমি ফজলু, ছোটবেলায় আমি আমার দাদির সাথে কত এসেছি আপনাদের বাড়িতে। আমার দাদি আপনার গভর্নেস ছিলেন।’ আবেশে আর আনন্দে সালমা যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। অবাক হয়ে সে তাকিয়ে রইল এই অচেনা সুদর্শন যুবকটির পানে। বাইরে তখন শীতের বিকেল সন্ধ্যার কোলে ঢলে পড়ার আয়োজন করছে। পাখিরা কিচিরমিচির করে নীড়ে ফিরে যাচ্ছে। আর বসার ঘরে সালমা আর সাহাবুদ্দিন ফজলুর সাথে আলাপচারিতায় নিমগ্ন। অনেক রাত পর্যন্ত বসল ফজলু। চা–নাশতার সাথে সাথে করল অনেক গল্প। শোনাল সেই সব কথা, আজ কী করে সে হলো একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। সালমা আর সাহাবুদ্দিন অভিভূত হয়ে শুনল সেই সব গল্প।