কোরিয়ায় টিকাদান শুরু, প্রথম পেলেন ৬১ বছরের স্বাস্থ্যকর্মী
পৃথিবীর অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়াতেও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে টিকা প্রয়োগে আক্রান্তদের বাইরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশসহ অন্য পেশাজীবীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার দেশটির সব প্রদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। এর আগে কোরিয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঘোষণা করেছে, পাঁচ হাজারের বেশি নার্সিংহোমের বাসিন্দা এবং ৬৫ বছরের কম বয়সী শ্রমিকেরা এই টিকা নেবেন। প্রথমে ২ লাখ ৭২ হাজার রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হবে টিকা। মার্চের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দেশটির সরকার।
কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সির (কেডিসিএ) পরিচালক জিয়ং ইউন কিয়ং বলেন, ‘অন্য দেশের মতো আমরা আগে কে টিকা পাবেন, তা নির্ধারণ করিনি। কোরিয়াজুড়ে শত শত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে।’
কোরিয়ায় প্রথম টিকা নিয়েছেন উত্তর সিউলের নওন জেলার ৬১ বছর বয়সী একটি নার্সিংহোমের কর্মচারী লি গিয়ং চুন। টিকা নেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমি আনন্দিত। টিকা নেওয়ার পর অনেক ভালো বোধ করছি।’
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পার্ক জং বলেন, আগামী নভেম্বরের মধ্যেই ৯০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে ১০ হাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র করার পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার।
এদিকে টিকা নেওয়ার পর সবাইকে ৩০ মিনিট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকতে বলা হয়েছে। পর্যবেক্ষণের পরে ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর প্রতি নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি বলেছে, টিকা নেওয়ার পর তিন দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডা, ক্লান্তি ও মাথাব্যথার পাশাপাশি প্রয়োগকৃত বাহুতে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
মোট চারটি কোম্পানির টিকা দক্ষিণ কোরিয়ার ৫৬ মিলিয়ন নাগরিক এবং সব অভিবাসী পাবেন। টিকা আসবে ধাপে ধাপে। প্রথম অ্যাস্ট্রাজেনেকা, দ্বিতীয় রাউন্ডে জনসন ও মডার্না এবং তৃতীয় রাউন্ডে আসবে বায়োএনটেকের টিকা।
কোরিয়ায় ফের করোনা বৃদ্ধিতে সামাজিক দূরত্বসহ সব বিধিনিষেধ আরও দুই সপ্তাহ বর্ধিত করা হয়েছে এবং পাঁচজনের অধিক মানুষ একসঙ্গে হলে জরিমানা ঘোষণা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার পর্যন্ত কোরিয়ায় নতুন করে ৪০৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৯২২ জন, মোট মৃত্যু ১ হাজার ৫৮৪ জনের।