কানাডায় বাংলাদেশিদের অন্য রকম ঈদ
কানাডার ম্যানিটোবাতে এবারের ঈদ ছিল অন্য রকম। উৎসব ছিল তবে তা প্রাণহীন। অধিকাংশ মসজিদে হয়নি ঈদের নামাজ। ম্যানিটোবা ইসলামিক আসোসিশনের অধীনে যে মসজিদগুলো ছিল তারা সীমিত আকারে ঈদের জামাত আয়োজন করেছে। শুধু ১০ থেকে ১২ জনে নিয়ে জামাত আয়োজন করেছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। মসজিদের পক্ষ থেকে সবাইকে বাসায় নামাজ পড়ার কথা বলেছিল। সবাইকে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঘরে নামাজ শেষ করে ‘উইনিপেগ গ্রান্ড মস্ক’–এর খুতবাতে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এই খুতবা তাদের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ম্যানিটোবাতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন রহিদুল মন্ডল। তিনি জানান, আমি বাসায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নামাজ শেষ করে মসজিদের ইউটিউব চ্যানেলে খুতবা শুনি। এটা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা।
নামাজ শেষে এখানকার চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী মানুষ এক কে জনের বাসায় যেত। বাংলাদেশিদের এই ঈদের দাওয়াতে এখানকার মূলধারার রাজনীতিবিদেরাও অংশ নিতেন। এ বছর তা দেখা যায়নি। ঘরোয়াভাবে সবাই ঈদ করেছে। নিজেরা রান্না করে নিজেরা খেয়েছে। সীমিত আকারে কিছু কাছের বন্ধুদের দাওয়াত করেছে।
সেলিম হায়দার, যিনি প্রায় ২০ বছর ধরে এখানে আছেন। তিনি জানান, ‘আমি প্রতিবছর ঈদে ৫০ থেকে ৬০টি পরিবারকে দাওয়াত করি কিন্তু এ বছর এই করোনা পরিস্থিতির কারণে মাত্র চারটি পরিবারকে বাসায় দাওয়াত দিয়েছি। তা–ও সময় ভাগ করে দিয়েছি। একটি পরিবার যাওয়ার পর আর একটি পরিবার এসেছে আমার বাসায়।’
অনেকে বাসায় পরিবার নিয়ে ঈদের নামাজ পরে ঘুরতে গিয়েছে এখানকার লেকের বিচে।
ওয়াহিদুজ্জামান জানান, নামাজ শেষ করে সেন্ট মোলো বিচে ঘুরতে গিয়েছিলাম পরিবার নিয়ে। সামাজিক দূরত্ব মেনে আমরা বিচের সৌন্দর্য উপভোগ করেছি।
ম্যানিটোবাতে অনেক বাংলাদেশি ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা নিজেদের মতো করে রান্না করে নিজেরা ঈদ উদযাপন করেছে। ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবার ছাত্র স্যামুয়েল জানান, দিনের অধিকাংশ সময় বাসায় ছিলাম। বন্ধুরা মিলে রান্না করে খেয়েছি। রাতে এক বাংলাদেশি পারিবারিক বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেয়েছি। প্রায় সবাই ফোন করে একে অন্যের খোঁজ নিয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভিডিও কোলে ফোন করে সময় কাটিয়েছেন অনেকে।