কানাডায় ঈদ উদ্যাপন
গত বছরের মতো এ বছরও কোভিড-১৯–কে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন করলেন কানাডার মুসলিমরা। এ বছরও কানাডার কোনো প্রভিন্স বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। কানাডায় ১০টি প্রভিন্স এবং ৩টি টেরিটরির মুসলিমরা নিজস্ব এলাকার সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। অনেক প্রভিন্সের মসজিদগুলোয় ২৫ জন একসঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন, আবার কোথাও ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক মানুষ নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে নামাজ আদায় করেছেন। সে কারণে মসজিদগুলোয় একাধিক নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে যারা মসজিদে নামাজের সুযোগ পায়নি, তারা খোলা মাঠে নামাজ আদায় করেছেন। এ বছর কানাডার বিভিন্ন পার্কে, বাসার পার্কিংয়ে, নিজের বাসায় কয়েকজন মিলে নামাজ আদায় করেছেন।
দিনটিতে সরকারি ছুটি না থাকার কারণে অনেকে এই দিনটিতে ছুটি নিয়েছেন। নামাজ শেষে অনেকে ফার্মে কোরবানি করতে যান। অনেকে আবার ঈদের পরের দিন কোরবানির পশু কোরবানি করতে যাবেন।
ফার্মগুলো মূল শহর থেকে দূরে হওয়ার কারণে অনেকে আবার বিভিন্ন মুসলিম মালিকানাধীন দোকানগুলোয় কোরবানি দিয়েছেন। ফার্মগুলোয় গড়ে প্রভিন্সভেদে পাউন্ডপ্রতি ৩ থেকে ৪ ডলার দাম পড়ে, অন্যদিকে দোকানগুলোয় পাউন্ডপ্রতি ৪ থেকে ৫ ডলার দাম পড়ে। অন্যদিকে একেকটি খাসির দাম পড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ কানাডীয় ডলার।
কানাডায় পশুর মাংস সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। গরু কোরবানি করার পর ‘হেলথ কানাডা’র নিয়ম অনুযায়ী জবাই করা পশু কয়েক দিন হিমাগারে ঝুলিয়ে রাখতে হয়। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রায় ৫ থেকে ৬ দিন পরে অনেকে মাংস পেয়ে থাকেন। তবে অনেকে আজ হাতে হাতে ছাগল বানিয়ে বাসায় মাংস নিয়ে এসেছেন।
তিন ভাগের এক ভাগ মাংস গরিবকে বিলানোর বিধান থাকলেও এ দেশে সেই অর্থে গরিব খুঁজে না পাওয়ার কারণে অনেকে সমপরিমাণ ডলার বিভিন্ন মুসলিম চ্যারিটিতে দান করেন কিংবা অনেকে সমপরিমাণ টাকা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন।
প্রতিবছর ঈদের দিন বা এর পরে একে অন্যের বাসায় দাওয়াতের প্রথা থাকলেও এ বছর কোভিড-১৯-এর কারণে তা ছিল না। সবাই খুবই সীমিত আকারে খুবই কাছের বন্ধুবান্ধব দাওয়াত করে করে ঈদ উদ্যাপন করেছেন।
*লেখক: কানাডাপ্রবাসী