কানাডায় ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ প্লাজার উদ্বোধন
কানাডার ম্যানিটোবার রাজধানী উইনিপেগ শহরের ক্রিক ব্রিজ পার্কে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ প্লাজার উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফেডারেল এমপি, প্রভিন্সিয়াল সরকারের অফিশিয়াল, উইনিপেগ সিটির কাউন্সিলর, বিভিন্ন কমিউনিটির প্রধান, বাংলাদেশ কমিউনিটির লোকজন, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজে প্লাজা উদ্বোধন করা হয়েছে ১৩ অক্টোবর।
১২ অক্টোবর বেলা ১টায় অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর জেনিস লুকাস। অনুষ্ঠানে সাউথ ওয়েস্ট কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থীরা থ্যাংকস গিভিং গান পরিবেশন করেন। বিয়ার্ডমোর্ড স্কুলের আটজন শিক্ষার্থী তাদের নিজের ‘মায়ের ভাষার গুরুত্ব’ নিয়ে আলোচনা করেন। দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন কয়েকজন বাংলাদেশি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ভবনের সভাপতি খাজা আবদুল লতিফ, উইনিপেগ সাউথ এলাকার ফেডারেল এমপি টেরি দুগাদ, শার্লি কলেজিয়েটের অধ্যক্ষ শেরিল ম্যাককোরিস্টার, আবদুল্লাহ কাফি, কানাডা-বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের ম্যানিটোবার প্রেসিডেন্ট শরীফ ইসলাম। পরে কেক ও ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
পুরো অনুষ্ঠানের আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশের ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের কথা। উঠে আসে কানাডার ভাষা হারানোর কথা। কানাডায় ফার্স্ট নেশনরা ৬০টি ভাষায় এখনো কথা বলে, তাদের ভাষাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। কানাডায় অফিশিয়াল ভাষা ইংলিশ এবং ফেঞ্চ হলেও এ দেশের মানুষ ২০০টির বেশি ভাষায় কথা বলে। এক বা দুই জেনারেশনের পর কানাডায় আসা অভিবাসীরা তাঁদের মায়ের ভাষা হারিয়ে ফেলেন। অনুষ্ঠানে মায়ের ভাষা টিকিয়ে রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় চার বছর আগে এই ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ প্লাজা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর প্রাথমিক উদ্যোক্তা ম্যানিটোবা বাংলাদেশ ভবন কর্তৃপক্ষ। পরে ম্যানিটোবা প্রভিন্সের উইনিপেগ সিটি গভর্নমেন্ট ক্রিক ব্রিজ পার্কে এই স্থাপনাটি নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ করে। এটি নির্মাণ করতে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার খরচ হয়। এই নির্মাণ খরচের ৮০ ভাগই সরকার প্রদান করে। বাকি ২০ ভাগ অর্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। কানাডার বিভিন্ন টিভি ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলো অনুষ্ঠানটি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।