কানাডায় অর্থ পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের দাবি

কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের দাবি করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। একইসঙ্গে কানাডাকে বাংলাদেশের অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্য হতে দেওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

মঙ্গলবার রাতে লুটেরা বিরোধী মঞ্চ, কানাডার আহ্বানে, ‘বেগমপাড়া ও লুটেরা বিরোধী আন্দোলনের দ্বিতীয় বার্ষিকী ও দুর্নীতি-অর্থপাচার রোধে প্রবাসীদের করণীয়’ বিষয়ক এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় বক্তরা এসব কথা বলেনন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, বেগমপাড়া বিরোধী এই আন্দোলন দেশের ভাবমূর্তির কোনো ক্ষতি করেনি। বরং এটি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছে।

এ সময় আন্দোলনকারীদের সাধুবাদ জানান ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকেরা বৈধ সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে অর্থ নিয়ে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি সেই অর্থে দেশে বন্ড কিনে বিভিন্ন মেয়াদে এর সুবিধা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ দুর্নীতি-অর্থপাচার ও বেগমপাড়া বিরোধী কানাডার এই আন্দোলনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে যে কাজটি করতে পারিনি, কানাডার প্রবাসীরা সে কাজটি করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও আমলাদের একটি ত্রি–চক্রিক ধারা।

ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় সাংসদ রাশেদ খান মেনন বলেন, সংসদে অর্থপাচার ও দুর্নীতি নিয়ে সামান্য আলোচনা হয়। তাছাড় অধিকাংশ সাংসদই এগুলো নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নন। সংসদে ব্যবসায়ীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে বর্তমান কাঠামোয় অর্থসম্পদ পাচার, দুর্নীতি-অনিয়ম লুটপাট বন্ধ করা কঠিন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট মঞ্জুরে খোদা (টরিক)। কানাডা থেকে আন্দোলনের সংগঠক এবং অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, রেজাউর রহমান, হাসান মাহমুদ, ফাইজুল করিম, আব্দুল হালিম মিয়া, আহমেদ হোসেন, সুমন সাঈদ, নওশের আলী, মাহবুব চৌধুরী রনি, মাসুদ লিটন, এ এন রাশেদা, মাশুক মিয়া, রুবিনা চৌধুরী, মৈত্রেয়ী দেবী, জ্যাকব, হাসান রনি, অশোক কর্মকার, মোহাম্মাদ বাশার, রেজা অনিরুদ্ধ, রোকেয়া পারভিন, রাজু, মামুন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, প্রায়ই সংবাদপত্রে অর্থপাচারের সংবাদ আসে। সরকারকে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বেগমপাড়া ও লুটেরা বিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি, বিশ্বের যে সব দেশে অর্থ পাচার হয় সেখানকার নাগরিকদেরও কানাডার এই উদাহরণ অনুসরণ করে- এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।