কানাডার প্রাদেশিক নির্বাচনে ২য় বার নির্বাচিত বাংলাদেশি ডলি
কানাডার অন্টারিও প্রাদেশিক সংসদ নির্বাচনে স্কারবোরো সাউথ–ওয়েস্ট আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি (মেম্বার অব প্রভেন্সিয়াল পার্লামেন্ট) নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি কানাডিয়ান ডলি বেগম। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাতে ভোট গণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
১০ হাজার ৩৪৮ ভোটের মধ্যে ৪ হাজার ৫৫৯ (৪৪.০৬ শতাংশ) ভোট পেয়েছেন তিনি। নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ব্রেট স্নাইডার ৩ হাজার ১১৯ (৩০.১৪ শতাংশ) ভোট পেয়েছেন। লিবারেল পার্টির লিসা প্যাটেল পেয়েছেন ১ হাজার ৯২৮ (১৮.৬৩ শতাংশ) ভোট।
ডলির বিজয় দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছে আবারও নিয়ে এসেছে উৎসবের উপলক্ষ। ২০০৮ সালে ডলি বেগম প্রথম বাংলাদেশি কানাডীয় নাগরিক হিসেবে দেশটির প্রাদেশিক এমপি নির্বাচিত হয়ে উজ্জীবিত করেছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের। ডলি বেগম দ্বিতীয়বারের মতো প্রাদেশিক এমপি নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশিদের পাশাপাশি তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষ।
পঞ্চাশোর্ধ ফিলিপিনো কানাডিয়ান নাগরিক আপ্লুত হয়ে বলেন, শি ডিজার্ভ দিস ভিক্টরি।
এক প্রতিক্রিয়ায় ডলি বেগম বলেন, ‘মানুষ কাজের মূল্যায়ন করেছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন। সবার প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান জানাই।’ কানাডার অন্টারিও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে এবার তিনজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ডলি বেগম (স্কারবোরো সাউথ–ওয়েস্ট, এনডিপি), ফারহিন আলিম (ইটোবিকো-লেকশোর, এনডিপি) এবং কানিজ মৌলি (অকভিল নর্থ-বারলিংটন, লিবারেল)। এই তিন প্রার্থীই কানাডার দুটি প্রধান দল এনডিপি ও লিবারেল পার্টি থেকে নির্বাচন করেছেন।
২০১৮ তে ডলির জয়ের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশি তরুণদের মধ্যে রাজনীতির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এই তরুণদের এগিয়ে আসা তারই প্রকাশ। নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে মনে করেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। সিলেটের রাজনগর উপজেলার বাজরাকোনা গ্রামের রাজা মিয়া-জবা বেগম দম্পতি কানাডার টরন্টো শহরে আসেন ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে।
সঙ্গে ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া কন্যা ডলি ও পুত্র মহসিন। অজানা দেশ, ভিন্ন ভাষা, হিমশীতল পরিবেশে শুরু হয় তাঁদের নতুন সংগ্রাম। বছর পার না হতেই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন রাজা মিয়া। প্রবাসজীবনের শুরুটাই বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সংসারে দেখা দেয় টানাপোড়েন। হাল ছাড়েননি জবা বেগম; টেনে ধরলেন সংসারের লাগাম। ঠিক ১৯ বছর পর ২০১৮ সালে বাজরাকোনা গ্রাম থেকে আসা সেই কিশোরী ডলি রচনা করছিলেন নতুন ইতিহাস।
কানাডার অন্টারিও প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে স্কারবরো সাউথ–ওয়েস্ট আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ডলি। কানাডার রাজনীতিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কারও এমন সাফল্য ছিল প্রথম।
চার বছর পর দ্বিতীয় মেয়াদে আবারও নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মকে দেশটির রাজনীতিতে অবদান রাখার প্রবণতাকে বেগবান করবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।