কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন
নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশের ৪৬তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন করেছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামশ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের দীর্ঘ পরিক্রমায় আত্মত্যাগী সকল শহীদসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাতের উদ্দেশ্যে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়। পরে দূতাবাসের কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।
দুপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে ললিতপুরের পার্ক গ্যালারিতে কাঠমান্ডু ট্রিয়ানালের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীদের অংশগ্রহণে একটি শিল্পকর্ম প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে শিল্পী ঢালী আল মামুন, দিলারা বেগম জলি, শিশির ভট্টাচার্য, মোস্তফা জামান, জিহান করিম, প্রমথেশ দাস পুলক, মারজিয়া ফারহানা ও রাজীব দত্তের শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। শিল্পের মাধ্যমে সমকালীন বাংলাদেশকে উপস্থাপনের এ বিশেষ প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন মাশফি বিনতে শামশ। প্রদর্শনীটি আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে হোটেল র্যাডিসনে একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেপালের উপরাষ্ট্রপতি নন্দ বাহাদুর পুন। নেপাল আর্মি ব্যান্ডের পরিবেশনায় দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
মাশফি বিনতে শামশ তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তার বক্তৃতায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য নেপালি জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমাণ বাংলাদেশের রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে নেপাল ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে শীর্ষ ও বিশিষ্ট পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় ভ্রমণ সহযোগিতাসহ দূতাবাসের বিভিন্ন কর্মসূচি ও দুই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পন্ন সাম্প্রতিক চুক্তিসমূহের ওপরও আলোকপাত করেন।
এই অনুষ্ঠানে নেপালের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, নেপালে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও কূটনীতিক এবং নেপালের পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ প্রায় সাত শ আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
সান্ধ্যভোজে দূতাবাসের আয়োজনে মুখোরোচক বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়। সবশেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিদের মাঝে দূতাবাসের বার্ষিক প্রকাশনা বিতরণ করা হয়।