দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ও প্রাণের ধর্মীয় উৎসব। দুর্গা পৌরাণিক দেবতা। তিনি আদ্যাশক্তি মহামায়া। জীবের দুর্গতি নাশ করেন বলে তাঁকে দুর্গা বলা হয়। বিষ্ণুর নির্দেশে সব দেবতার তেজঃপুঞ্জ থেকে যে দেবীর জন্ম হয়, তিনিই দুর্গা। মহিষমর্দিনী দশপ্রহরণধারিণী দেবীর আবাহন অর্থাৎ মহালয়া। দিনটি এ বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর। আশ্বিনের শারদ প্রাতে জগতের দুঃখ-ক্লেশ-তাপ, সব নৈরাজ্য, অন্যায়-অনাচার, হিংসা-দ্বেষ এবং সব সংকট থেকে মানুষের মুক্তির জন্য দুর্গতিনাশিনী দুর্গাকে স্মরণ করে প্রার্থনা করা হয়। এ দিবসকে সামনে রেখে ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর কলাকার আর্টস ফেসবুক অনলাইন মিউজিকের মাধ্যমে দুর্গতিনাশিনীকে স্মরণ করে। এটি কলাকারের ৪০তম পর্ব। মূল ভাবনা, পাণ্ডুলিপি ও পরিচালনায় চন্দ্রা চক্রবর্তী এবং প্রযোজনায় কলাকার আর্টস, ইউকে।
এ পর্বে চারজন নতুন প্রতিভাবান সংগীতশিল্পী অংশগ্রহণ করেন। তবলায় রোহেন বোস, সেতারে কৌস্তভ মজুমদার, নৃত্যে সংগীতা চ্যাটার্জী, ক্ল্যাসিক্যাল ভোকালিস্ট রননজয় কুলকার্নি। শ্রী দুর্গা কাহিনির ইংরেজি ধারাভাষ্যে চন্দ্রা চক্রবর্তী।
শুরুতেই ধ্যান-শ্লোকের সঙ্গে নাচ দিয়ে শ্রীশ্রী দুর্গার আবাহন শুরু হয়। সংগীতা চ্যাটার্জী শ্রী দুর্গার প্রতিভাস হয়েই নাচে রূপ দিয়েছেন। মনে হচ্ছিল ত্রিনয়নী মা দুর্গা নিজেই আবির্ভূত হয়েছেন। নাচে এই গুণী শিল্পীর সঙ্গে সঙ্গ দিয়েছেন তাঁরই দুই ছাত্রী কবিতা বসাক ও স্নেহা বোসলে।
পৌরাণিক মতে, মা দুর্গার সঙ্গে মহিষাসুরের যুদ্ধের যে তাণ্ডবচিত্র দেখা যায়, আজকের অনুষ্ঠানে তা ফুটিয়ে তোলা হয় তবলা দিয়ে। কলকাতা থেকে রোহেন বোস মহিষাসুরের চরম উগ্রতা ও ধৃষ্টতার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন তবলার বোল দিয়ে। তবলার প্রথিতযশা বোস পরিবারের ছেলে রোহেন তাঁর প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন।
মহিষাসুরকে বধ করতে সব দেবতার প্রার্থনায় মা দুর্গা মর্ত্যে নেমে আসেন। সেই কাহিনির মর্মকথা তুলে ধরা হয় কলকাতার ছেলে কৌস্তভ মজুমদারের সেতারে রাগ মালকোষে। ললিত সুরের মূর্ছনা এতটাই প্রবল ছিল যে শ্রোতারা সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। অমীয় ধারায় তার এ বাজনা নিকট ভবিষ্যতে তাঁকে আরও বড় সম্মানের জায়গায় নিয়ে যাবে।
মা দুর্গার যুদ্ধের প্রস্তুতিকল্পের সংকল্প রূপদান করেছেন মুম্বাই থেকে রননজয় কুলকার্নি। উচ্চাঙ্গসংগীতে ‘হে চণ্ডী দুঃখ খণ্ডি...’ গানটিকে রননজয় যুদ্ধজয়ের সিংহদ্বারে নিয়ে গেছেন তাঁর মায়াবী কণ্ঠের জাদু দিয়ে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শ্রোতারা সাময়িক ইন্দ্রজালে বন্দী হয়ে পড়েছেন। অসাধারণ কণ্ঠ!
এবার মহিষাসুর বধের পালা। মা দুর্গা যুদ্ধের ময়দানে নামলেন। প্রচণ্ড যুদ্ধের নবম তিথিতে (ষষ্ঠী থেকে নবমী) মা দুর্গা মহিষাসুরকে ত্রিশূল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। সবার মুখে হাসি ফুটে উঠল। দেবীর চরণে সবার প্রণতি, ‘সর্ব মঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে, শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরি নারায়ণী নমস্তুতে।’ সমাপ্তির চিত্রটি চিত্রিত হয়েছে সংগীতা চ্যাটার্জীর নাচের মধ্য দিয়ে। সর্বাত্মক মেধা উজাড় করে দিয়ে তিনি চিত্রকল্পটি ফুটিয়ে তুলেছেন। নাচের মুদ্রা, অঙ্গভঙ্গি এবং ক্রমিক গতি বা চলন অর্থাৎ সব মিলিয়ে শ্রোতাদের এই গুণী শিল্পী বিমোহিত করে রেখেছেন। অনবদ্য উপস্থাপনা।
শ্রী দুর্গার জন্মবৃত্তান্ত চন্দ্রা চক্রবর্তী গ্লোবাল অডিয়েন্সের কারণে ইংরেজিতে দিয়েছেন। দুর্গার যে তেজোময় ভাব, ঠিক সেই ভাবটিই তিনি কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন। তেজোদীপ্তভাবে কণ্ঠ থেকে প্রতিটি শব্দ বের হয়ে এসেছিল। ধারাবাহিক বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি দৃশ্যের রূপায়ণ অত্যন্ত সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়েছে। অগণিত দর্শক-শ্রোতা আজকের পর্বে যুক্ত হয়েছেন। লাইক, শেয়ার, কমেন্টও অগণিত। যদিও এটি অনলাইন, তথাপিও এতে বোঝা যায় অনুষ্ঠানটি শ্রোতাদের কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। এমন অনুষ্ঠান স্টেজে পারফর্ম করতে পারলে আরও অনেক বেশি ভালো করা যেত। সংক্ষিপ্ত আকারে এমন অনলাইন মিউজিক শো দিয়ে একটি মিথকে তুলে ধরার মতো সৃষ্টিশীল কাজ ভার্চ্যুয়াল জগতে এই প্রথম। এমন সৃষ্টিশীল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কলাকার আর্টস নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবি রাখে।
৫ সেপ্টেম্বর প্রথম পর্বের দুটো সেশন ছিল। প্রথম সেশনে দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গা। দ্বিতীয় সেশনে ছিল এই চার শিল্পীর একক পরিবেশনা। একক পরিবেশনাটিও অত্যন্ত চমৎকার ছিল। প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁদের প্রতিভায় সমুজ্জ্বল। এ পর্বের ব্যাপ্তিকাল ছিল সাড়ে তিন ঘণ্টা।
৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় পর্বে কলকাতা থেকে দেবপ্রিয় ও সমন্বয় যোগ দেন। যুগলবন্দী সুরবাহার ও শাস্ত্রীয় কণ্ঠশিল্পীর অপূর্ব সমন্বয়ে কাত্যায়নী স্তুতি এক স্বর্গীয় আবেশ সৃষ্টি করে। তারপর একে একে আরও অনেক ধ্রুপদি সংগীত পরিবেশন করা হয়। এ দুজন শিল্পীর এত বেশি বোঝাপড়া ছিল যা না দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, ওরা কত উঁচু মানের শিল্পী! যেমন কণ্ঠের জাদু, ঠিক তেমনি সুরবাহারের বাজনা! যাকে বলে সোনায় সোহাগা। উল্লেখ্য এ দুজন বেনারস ও লক্ষ্ণৌ ঘরানার শিল্পী।
উদীয়মান তরুণ তবলাবাদক আয়ুষ্মান মজুমদার বয়সে তরুণ হলেও বাজনায় মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন ঠিক বড়দের মতো। তবলায় হাতের কারুকাজ ছিল দৃষ্টিনন্দন।
কলাকারের প্রতিটি পর্বই শতভাগ সফল ও সার্থক। ‘দ্য গডসেন্ডস’ নামের ধারাবাহিক মাসিক অনলাইন অধিবেশনে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দুটো অনুষ্ঠান ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত তথা জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা ছেলে-মেয়েরাও যে তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল কাজের অংশীদার হতে পারে, তারই পরিচয় এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়।
দারিদ্র্যপীড়িত শিশুদের সহায়তা করতে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করেছে কলাকার। তারই উপলক্ষে ১৪ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে ইস্ট-ওয়েস্ট মিউজিক্যাল ব্যান্ড ‘মিউজিক্যাল মাস্ক’ নামের একটি অনবদ্য অনুষ্ঠান হয়ে গেল। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কিশোর-কিশোরী। এ অনুষ্ঠানে যে অর্থ পাওয়া গেছে, তার পুরোটাই ইউনিসেফের তহবিলে জমা হয়েছে।
৪০তম পর্বও অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে। একটি মিথকে মিউজিক দিয়ে ফুটিয়ে তুলে শ্রোতাদের তাঁর রসাস্বাদন করানো একজন বিদুষী শিল্পীর প্রকৃত শিল্পীসত্তার পরিচয় প্রমাণ করে। সৃষ্টিশীল শিল্পের প্রতি একজন প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীর যে আবেগ ও উচ্ছ্বাস, সেটাই কলাকার সার্থকভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে পুরো পৃথিবী স্তব্ধ। কোভিড-১৯-এর লকডাউনে থাকা প্রতিভাবান তরুণ সংগীতশিল্পীদের কাজের অভাবে বেশ অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ স্থবির সময়ে তাঁদের পাশে থাকার তাগিদ কলাকার আর্টস, ইউকে হৃদয় থেকে অনুভব করেছে। তাই তাদের উৎসাহ প্রদানের জন্য কলাকারের প্রধান নির্বাহী, বিদুষী চন্দ্রা চক্রবর্তী বিশ্বজুড়ে এই তরুণ প্রতিভাবানদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্মানিত করছেন এবং তাঁদের অংশগ্রহণের জন্য একটি ফি প্রদান করছেন। চন্দ্রা চক্রবর্তী ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ প্রণোদনার কাজটি করে চলেছেন। মানবিক হৃদয় বলে কথা!
এ বছর ১৮ জুন চন্দ্রা চক্রবর্তীর গুরু পণ্ডিত এ কাননের জন্মশতবার্ষিকী। তিনি বলতেন, ‘মানবতার দায় অপরিসীম। তাই মানুষকে ভালোবাসলে, মানুষের প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে সংগীতের প্রতি ভালোবাসা হয়ে যায়। একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে এটাই বড় মানবিকতা।’ এমন মানবতাবাদী বাণীকে স্মরণ করেই চন্দ্রা চক্রবর্তী গুরু পণ্ডিত এ কাননের জন্মশতবর্ষে একের পর এক সর্বোচ্চ মানের অনুষ্ঠান করে চলেছেন ‘গুরু-শিষ্য পরম্পরা’ ধারাকে পুরো পৃথিবীর সংগীতপিপাসুদের কাছে পৌঁছে দিতে। এটা গুরুর প্রতি শিষ্যের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার অর্ঘ্য। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ফেসবুক অনলাইনে ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ, ওস্তাদ মাশকুর আলী খান, ওস্তাদ মুরাদ আলী খান, ওস্তাদ সুজাত খান, ওস্তাদ রাশিদ খান, পণ্ডিত তন্ময় বোস, পণ্ডিত গৌরব মজুমদার, পণ্ডিত রূপক কুলকার্নি, পণ্ডিত স্বপন শিবা, পণ্ডিত বিজয় কিসলু, পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস, পণ্ডিত হিন্দোল মজুমদার, পণ্ডিত সঞ্জু সাহাই, পণ্ডিত দেবাশীষ ভট্টাচার্য, আচার্য্য পণ্ডিত জয়ন্ত বোস, পণ্ডিত কুমার বোস, পণ্ডিত শুভঙ্কর ব্যানার্জী, পণ্ডিত ধরম্বির সিনহা, পণ্ডিত তুষার দত্ত, পণ্ডিত রণজিৎ সেনগুপ্ত, পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার, বিদুষী শুভ্রা গুহা, বিদুষী সুমিত্রা গুহ, অনুপ জালোটা, ড. রাধিকা চোপড়া, ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, ড. মানসী মজুমদার, বিদুষী রাজশ্রী ঘোষ, আরশাদ আলী খান, অনুপ কুমার বিশ্বাস, শিরিন সেনগুপ্তা, শ্রাবণী সেন, বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়, সুপ্রিয়া দত্ত, ইন্দ্রানী দত্ত, শতরূপা ঘোষ, লাইসা আহমেদ লিসা, উর্বী অধরা, পূর্বা মধুরা, রৌনক পাল, আর্চিক ব্যানার্জী, আয়ুষ্মান মজুমদার, রাজশ্রী সেনগুপ্তা, রিম্পা শিবা, অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্যসহ আরও বিখ্যাত সব সংগীতজ্ঞ এবং নতুন প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিভাবান শিল্পীরা উপস্থিত হয়ে কলাকারকে ধন্য করেছেন।
কলাকার আর্টসের এ কর্মকাণ্ডকে বিশ্বময় প্রচার ও প্রসারে বিশেষ মূল্যায়ন করেছে আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া, স্টেটসম্যান, এনডিটিভি, টেলিগ্রাফ, তাজা সমাচার, আজকাল, প্রথম আলোসহ সব মূলধারার প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া।
চন্দ্রা চক্রবর্তী, নন্দিত এই ভারতীয় ধ্রুপদি কণ্ঠশিল্পী পণ্ডিত এ কানন, মালবিকা কানন এবং ঠুমরি রানিখ্যাত পদ্মবিভূষণ গিরিজা দেবীর কাছে সংগীতের ইতিবৃত্ত ও ধ্রুপদি শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ‘সংগীত গবেষণা একাডেমি’-তে বিশেষ সম্মানে ভূষিত শিক্ষার্থী ছিলেন। অল ইন্ডিয়া রেডিওর জাতীয় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত এবং ন্যাশনাল স্কলার। দক্ষিণ আফ্রিকার উইটওয়টারস্র্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক (সংগীত, ইতিহাস, সমাজ ও উন্নত গবেষণা) ছিলেন। বর্তমানে লন্ডনে বরা অব মেরটনের একটি লাইব্রেরি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি কলাকার আর্টস, ইউকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। তাঁর মেধা ও প্রজ্ঞার সমন্বয়ে কলাকার আর্টস, ইউকে অনলাইন দুনিয়াতে স্বল্প সময়ে ভূয়সী প্রশংসা লাভে সমর্থ হয়েছে। বলা যায়, অনলাইন দুনিয়াতে কলাকার আর্টস প্রথম স্থান অধিকার করে আছে। কলাকার আর্টসের উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব প্রতিভাবান সংগীতশিল্পীর প্রতিভা ও কর্মদক্ষতাকে তুলে ধরা এবং দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানো। মহৎ হৃদয় দিয়ে মহৎ কর্ম সম্পাদনই কলাকারের আদর্শ। মানবতার স্বীকৃতি কলাকার আর্টস, ইউকে।
জীবনধর্মী শিল্পের বিচিত্র প্রকাশকে অবলম্বন করেই সাহিত্য-শিল্পের সমৃদ্ধি হয়। শ্রেষ্ঠ শিল্পজীবনকে গভীরভাবে, নিবিড়ভাবে স্পর্শ করে। আর এই নিবিড়তার প্রকাশ পরিচয়ের মধ্যে শিল্পীর আত্মপ্রকাশ অনিবার্য হয়ে ওঠে। আদর্শবাদের প্রকাশ, গভীরতর জীবনদৃষ্টি শিল্পীসত্তার ক্রম প্রসারই তার সৃষ্টিকে অভিনবত্বের গৌরব ও সম্মান দান করে এবং নিজেকে ক্রমান্বয়ে ছাড়িয়ে যাওয়ার নতুন ইতিহাসও নতুন করে নতুন ভাবনায় নতুন তাৎপর্যে মূল্যবহ হয়ে ওঠে। আর এখানেই একজন ‘চন্দ্রা চক্রবর্তীর’ শিল্পীসত্তার বৈশিষ্ট্য ও সার্থকতা। হৃদয়বৃত্তি তাই মানবিক আবাহন জানিয়েছে আন্তরিকতাকে। মানবিক ও কল্যাণকামী মন-মানসের ঔজ্জ্বল্যে উদ্ভাসিত মহিমান্বিত রূপেরই এক বিশিষ্ট প্রকাশ 'চন্দ্রা চক্রবর্তী ও কলাকার আর্টস।’ বেঁচে থাক শুদ্ধতায় আর শিল্পমনস্কতায়।