একরাশ হতাশা নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছি

আমরা যারা বিদেশে সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ ঘণ্টা কাজ করি, তারাই কেবল বুঝতে পারি একদিন ছুটির মূল্য কতটুকু। এই একদিন যে কীভাবে চলে যায় বোঝা যায় না। অনেক ব্যক্তিগত কাজ থাকে এই দিনে। এসব করতে করতে দিনটিই চলে যায়। তার পরও সময় বের করে কোনো কোনো সপ্তাহে হয়তো ছবি দেখতে বা কোথাও যাই। গভীর রাতে ঘরে ফিরে ঘুমাই। পরদিন খুব ভোরে উঠে কাজে যাই! এই তো আমাদের জীবন!

তবে প্রতিদিনই ঘুমানোর আগে দেশের খবর নিই বা জানার চেষ্টা করি । আজও (৫ জানুয়ারি) নিলাম। নিয়ে বরাবরের মতো হতাশ হলাম! এ কী অবস্থা! আর কত মানুষের রক্তে গণতন্ত্র শুদ্ধ হবে? আমাদের রাজনীতি রাজপথ ছেড়ে আলোচনার টেবিলে কখন আসবে? যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমেই শেষ হওয়া হলো সভ্যতা। বলপ্রয়োগ করে নিজ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলো অসভ্যতা, বর্বরতা। আর এই অসভ্য, বর্বর কাজটিই আমরা যার যার অবস্থান থেকে করছি!

আমাদের ভেতর মায়া, মমতা, শ্রদ্ধা, বিনয়, প্রেম, ভালোবাসা এসব গুণাবলি সম্ভবত ক্ষয়ে যাচ্ছে! অথবা পরম করুণাময় যখন মানব সম্প্রদায়ের মধ্যে এসব গুণাবলি বর্ষণ করছিলেন, তখন বাংলার বেশির ভাগ মানুষ মাথায় ছাতা ধরে রেখেছিল!

আমি আমার প্রিয় দেশের যেদিকে চোখ রাখি, দেখি একদল ভয়ংকর মানুষ, যাদের চোখে মায়া নেই। শুধু লোভ, ঘৃণা আর হিংসা আছে! আমাদের বিবেক যে কোথায় লুকিয়ে আছে, তা যদি জানতে পারতাম! সবাই বলে জাতির বিবেক, জাতির বিবেক! কিন্তু কোথায় জাতির বিবেক? যাদের আমরা জাতির বিবেক মনে করি, তাদের কাছে এই প্রশ্নটি করার খুব ইচ্ছে করে, একটি জনপদ কি এভাবেই ধ্বংস হয়ে যাবে?

আমার এখন ঘুমানোর সময়। যখন ঘুমাতে যাচ্ছি, একরাশ হতাশা আর একবুক কষ্ট নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছি। আমি জানি রাত পোহালেই আমাদের আরেকটি সকাল হবে। সূর্যহীন সকাল! আশাহীন সকাল!