ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই দরজার ফাঁক দিয়ে জ্ঞানের আলো নিয়ে আসে প্রথম আলো। আমার দিনের শুরুটা হয়েছিল ঠিক এভাবেই। অফিসে যাওয়ার প্রাক্কালে প্রথম আলোর পাতার সঙ্গে সখ্য বহুদিনের। হাতের সময়টুকু চোখ আটকে থাকা ক্ষণিকের এই মুহূর্ত যে কত গুরুত্বপূর্ণ, তা কম বেশি সবাই জানি। প্রথম থেকে শেষ পৃষ্ঠার প্রতিটা নিউজ, ফিচার, নিবন্ধ, প্রবন্ধ ও সম্পাদকীয় জ্ঞানের এক অপূর্বভান্ডার। হয়তো পুরোটা পড়ার সময় হয়ে উঠে না, কিন্তু অফিসে গিয়ে বাকিটা শেষ তো করতেই হবে।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক সংবাদ, তথ্য ও রেফারেন্স খুঁজতে গিয়ে আমাদের দ্বারস্থ হতে হয় সংবাদপত্রের ওপর। সেই ক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, তথ্যবহুল পত্রিকার কথা বললে প্রথমে চলে আসে প্রথম আলোর নাম। মানবাধিকার সংক্রান্ত সব সংবাদ ফাইলিং করা নিত্যদিনের কাজ। পরবর্তীতে রেফারেন্স হিসেবে, গবেষণা কাজে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানে এই ফাইল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অফিস শেষে প্রতি বুধবার প্রথম আলো কার্যালয়ে বন্ধুসভার আড্ডা প্রথম আলোকে আরও কাছে থেকে দেখা। কবিতা পাঠ, দন্তস্য রওশনের আলোচনা, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে বৈশাখী আড্ডায় যা পেয়েছি তা ভুলে যাওয়ার নয়।
২০০৭ সালে দেশ ছেড়ে আসার পর অনলাইনে প্রথম আলোর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কটা থেকেই যায়। নিয়মিত দেশের সংবাদ, বন্ধুসভার পাতায় কবিতা এবং ‘পা ভাঙা চড়ুই’ কবিতা বইয়ে কবিতা প্রকাশ বিশাল পাওয়া। বন্ধুসভায় মূল আকর্ষণ হলো মানবতার জয়গান। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধুদের মানবকল্যাণে কাজ মানুষকে শেখায় ভালোবাসতে ও মানুষকে মানব মর্যাদা দিতে। আজ প্রথম আলোকে অনুসরণ করে অনেক জাতীয় দৈনিক এই ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। এই কৃতিত্বের দাবিদার নিঃসন্দেহে প্রথম আলো।
প্রথম আলোর কাছ থেকে প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় পাওয়া ‘দূর পরবাসে’ পাতা। ২০১৩ সাল থেকে এই পাতায় নিয়মিত অংশ নিয়ে যাচ্ছি। লিখে যাচ্ছি প্রতিবেদন, ফিচার, কবিতা। এখন প্রায় সবাই চেষ্টা করেন এই পাতায় কিছু লিখতে। একটা সময় প্রতি বুধবারে দূর পরবাসে পাতা প্রকাশিত হতো প্রিন্ট সংস্করণে, কিন্তু সময়ের তাগিদে এখন প্রতিদিন আপডেট হচ্ছে এই বিভাগটি। প্রতিদিন পাচ্ছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশি কমিউনিটির সংবাদ।
প্রবাসে বসে প্রথম আলো পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি গর্বিত। প্রথম আলো আঠারোর সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। আমরা যা চেয়েছি, যা পেয়েছি প্রথম আলো তা সিদ্ধ হস্তে আমাদের দিয়েছে মন উজাড় করে।
প্রথম আলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।
ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র