ইসলামাবাদে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সঙ্গে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে মিশনে কালো ব্যাজ ধারণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা পালন, বাণীপাঠ, আলোচনা, ভিডিওচিত্র প্রদর্শন ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

আজ রোববার হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অংশগ্রহণে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালিত হয়।
ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। জাতির জনকের প্রমাণাকৃতি প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনার ও হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী।

পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা ও স্মরণসভা শুরু হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে শাহাদাতবরণকারী অন্যান্য ব্যক্তি ও আত্মীয়ের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

আলোচনা পর্বে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, এ বছর আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, যা জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্বাধীনতার রূপকার। ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন, ৫২–এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪–এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮–এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬২–এর গণবিরোধী শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬–এর ৬ দফা, ৬৯–এর গণ–অভ্যুত্থান, ৭০–এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু। তিনি শুধু বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন সব নিপীড়িত, শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তির অগ্রনায়ক। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও অর্থনীতিতে পশ্চাৎপদ বাংলাদেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশকে একটি দারিদ্র্যমুক্ত, শোষণ-বঞ্চনাহীন ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণের কাজ শুরু করেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত স্বাধীনতাবিরাধী মহলের ষড়যন্ত্রে কতিপয় বিপথগামী কুচক্রী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের অগ্রগতি রুদ্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের এ চক্রান্ত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিলেও চিরতরে রুদ্ধ করে দিতে পারেনি।

রুহুল সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথ ধরে, তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার ‘রূপকল্প–২০২১’–এর সফল বাস্তবায়ন করেছে এবং ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরিশেষে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।