ইসলামাবাদে বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী পালন
পাকিস্তানের বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
রাজধানী ইসলামাবাদে হাইকমিশন প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে প্রবাসী বাংলাদেশি, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। চ্যান্সারি ভবন ও এর দেয়ালে জাতীয় শোক দিবসের পোস্টার লাগানো হয় এবং অনুষ্ঠানে যোগদানকারী সবাই কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
দিবসটি পালন উপলক্ষে সন্ধ্যায় এক আলোচনা ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর তুলনাহীন অবদান এবং জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন। তাঁরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসান বলেন, ঘাতকেরা বাঙালির হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি যেমন মুছে দিতে পারেনি, তেমনি স্বাধীনতার চেতনার চিরন্তন শিখাকেও নিভিয়ে দিতে পারেনি। তিনি বলেন, যথোপযুক্ত বিচারিক প্রক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বিচার সম্পন্ন করার মাধ্যমে বাংলাদেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের ওপর বারবার আঘাত হানার অপচেষ্টার কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার সতর্ক করে বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্র কখনোই থেমে থাকেনি। প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের এ হুমকি মোকাবিলায় তিনি সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তারিক আহসান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি আধুনিক, উন্নত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে জাতীয় জীবনে ধারণ করে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতিহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্ব নিবেদন করা হয়। সবশেষে বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারিক আহসান ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
এর আগে সকালে চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বাংলাদেশি নাগরিকদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন হাইকমিশনার তারিক আহসান। এরপর শোক দিবস উপলক্ষেÿচ্যান্সারি প্রাঙ্গণে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। তারিক আহসান প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শাহাদতবরণকারীদের বেশ কয়েকটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে স্থান পায়।
এ ছাড়া ৭ আগস্ট বুধবার বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে পবিত্র কোরআন খতম ও দোয়া করা হয়। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ১৩ জন হাফেজ কোরআন খতমে অংশগ্রহণ করেন। বিজ্ঞপ্তি