ইসলামাবাদে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মর্যাদার সঙ্গে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন পালন করেছে। হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসীদের উপস্থিতিতে চান্সারি প্রাঙ্গণে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহ্সান আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সূচনা করেন।
সন্ধ্যায় দিবসটি উপলক্ষে চান্সারিতে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইসলামাবাদে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এতে অংশ নেন।
হাইকমিশনার তারিক আহসান ও অন্যরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে হাইকমিশনার শিশুদের সঙ্গে নিয়ে জন্মশতবার্ষিকীর কেক কাটেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাণী পাঠ করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি-অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে, পাকিস্তানের বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী মিসেস তাহিরা আবদুল্লাহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর উর্দু সংস্করণ প্রকাশ করতে হবে। যাতে পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম পাঠ্যবইয়ের বাইরে সত্য ইতিহাস শিখতে ও জানতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে কেবল তাঁর জাতির মুক্তিদানকারী হিসেবে স্মরণ করলে হবে না, বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে স্মরণ করতে হবে।
হাইকমিশনার বলেন, বাঙালির অধিকার আদায়ের আপসহীন সংগ্রামে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে আর প্রগতিশীল মূল্যবোধের অগ্রায়ণে বঙ্গবন্ধু তাঁর সারা সত্তাকে নিয়োজিত করেন। তাঁর আহ্বান আর প্রেরণাতেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে দেশকে মুক্ত করেন। ইসলামাবাদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বছরব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর উদ্যোগের মাধ্যমে মুজিব বর্ষ উদযাপন করবে। ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধু বিষয়ে স্মারক অনুষ্ঠান, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, নির্মাণাধীন চান্সারি চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন ইত্যাদি সম্পন্ন করা হবে।
এ ছাড়া স্থানীয় যুবকদের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু: রাজনীতির কবি’ শীর্ষক একটি রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহ্সান। তিনি একান্তভাবে কামনা করেন যে বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণের মাধ্যমে তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি আত্মস্থ করে শিশু-কিশোরেরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাবে।
সাংস্কৃতিক পর্বে বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত কবিতা আবৃত্তি করা হয়। শিশুরাও ছড়া আবৃত্তি করে। সমবেত কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত অমর সংগীত ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত’ পরিবেশন করা হয়।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশি শিশুরা হাইকমিশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের কূটনীতি’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন’ বিষয়ে রচনা লেখা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের মধ্যে হাইকমিশনার পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করেন। এ ছাড়া উপস্থিত সব শিশুর মধ্যে উপহারও বিতরণ করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের মধ্যে বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি