আমার পতাকা
উপলব্ধিকে ছুঁয়ে যায় নিঃসঙ্গ প্রবাস।
আছ তুমি সবখানে, তবু নেই যেন কোনোখানে!
সেদিন দেয়ালে দেয়ালে ফুঁসে উঠেছিল কিছু কথা
প্রেমিক পুরুষ প্রিয়তমার আলিঙ্গন ছেড়ে
নাড়ি’র ব্যথার টানে পুঁতেছিল স্বপ্ন বীজের দানা।
নিত্যদিনের রোজনামচায় ছাত্ররা ভূগোলের ম্যাপে এঁকেছিল
একটি নতুন দেশের পতাকা।
ফিনকি ছোটা রক্ত দিয়ে হলো সূচনা!
আমি যুদ্ধ দেখিনি, তবে শুনেছি—
সেদিন রাস্তায়, ডোবা-নালায় পড়েছিল জোয়ানের লাশ তরতাজা,
বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত বাংলার ঘরে লালিত
নারীর লুকানো শরীরের সম্ভ্রমের রক্তজবা!
নদীর স্রোতে ভেসে গেছে ঘরে না ফেরা সূর্য সন্তানেরা—
যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে শুধু স্বজন হারানোর আর্তনাদের কান্না।
আমি সেই কান্না দেখিনি,
তবে সহস্র প্রেমিক পুরুষের স্বপ্নবীজ ফুঁড়ে
অঙ্কুরিত মহিরুহের ছায়ায় বাঁচি;
আমি সেই ছাত্রদের আত্মত্যাগে আনা পতাকায় নিজেকে খুঁজি।
এ শহরে আজও ডিসেম্বর এলে মনের কোণে শীত জমে
শুকনো পাতার কড়মড়ে আওয়াজে
ফেলে আসা ভৈরবের স্মৃতি টানে;
নিশ্বাসের আভিজাত্যে ইতিহাসের অমৃত স্বাদ
রেটিনাজুড়ে দৃষ্টি কেবল শ্যামল মায়ের শ্যামল খোঁজে।
আকাশচুম্বী অট্টালিকায় চোখ ধাঁধে,
শুধু কী যেন নেই আশপাশে—
শৌর্যে -গর্বে পত-পত উড়তে থাকা
আমার চির-চেনা পতাকা।