আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করল বাংলাদেশ দূতাবাস ভিয়েনা

রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন করেছে ভিয়েনার বাংলাদেশ দূতাবাস। বাংলাদেশের সঙ্গে সময়ের মিল রেখে স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা সাতটায় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর ভিয়েনা বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা, মুক্তিযোদ্ধা, শিশু-কিশোরসহ অন্য ব্যক্তিবর্গ পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

কোভিড-১৯-এর বিধিনিষেধের কারণে দিবসের তাৎপর্য নিয়ে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষাশহীদদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয়।

দূতাবাস প্রাঙ্গণে অস্থায়ী শহীদ মিনারে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা, মুক্তিযোদ্ধা, শিশু-কিশোরসহ অন্য ব্যক্তিবর্গ পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান
ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্ত বৃথা যায়নি। পাকিস্তানের সরকার শেষ পর্যন্ত বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল। তাঁরা আরও বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি নতুন জাতীয় চেতনার উদ্ভব হয়েছিল এবং পরবর্তী সময়ে এ চেতনা ধারণ করে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।’ বক্তারা প্রবাসে বসবাসরত নতুন প্রজন্মের নাগরিকদের মধ্যে মাতৃভাষাচর্চার গুরুত্ব আরোপ করেন।
আলোচনার সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সব শহীদ, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্যোগের ফলে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে বাঙালি জাতি বিশ্বে আরও মর্যাদাশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠান শেষে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সব শহীদ, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। উপস্থিত অতিথিদের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

*লেখক: রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া

**দূর পরবাসে লেখা পাঠাতে পারেন [email protected]