আটলান্টিকের নীলাভ জলের লবস্টার!

উৎসুক পর্যটকদের হাতে লবস্টার
উৎসুক পর্যটকদের হাতে লবস্টার

যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্য সাগর-নদী-খাল-বিল ও পাহাড়ের মিতালি। এখানে রয়েছে প্রকৃতির অপূর্ব নান্দনিক মেলবন্ধন। যেকোনো পর্যটককে খুব কাছে টেনে নিয়ে যাবে। নিউজার্সি হয়ে মেইনে ঢুকতে সবুজের গড়াগড়ি। গ্রীষ্মের এ সময়ে আটলান্টিক মহাসাগরের নীলাভ জলে লবস্টারের (চিংড়ি) ছোটাছুটি মেইন রাজ্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ সময় সাউথ ওয়েস্ট, নর্থ ইস্ট হারবার ও বার হারবার এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। জেলেরা দল বেঁধে বিশেষ কায়দায় তৈরি খাঁচার নেট নিয়ে ছুটে যান সাগরে।

লবস্টার শিকারের অপেক্ষায় ট্রলার
লবস্টার শিকারের অপেক্ষায় ট্রলার

মেইনের অ্যাকাডিয়া ন্যাশনাল পার্ক থেকে ইকো বিচ পর্যন্ত পাহাড়ের কোল ঘেঁষে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লেক-খালের পথ গিয়ে মিশেছে আটলান্টিকের নীলাভ জলে। বছরের জুন-জুলাই-আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে লবস্টার চিংড়ি আহরণ। এক সপ্তাহের মধ্যে গভীর সাগর থেকে ট্রলার ও নৌকাভর্তি লবস্টার নিয়ে ফিরে আসেন জেলেরা।
আটলান্টিকের একজন জেলে মাইক জানালেন, মেইনের তিনটি এলাকা থেকে প্রায় দুই শ মাছ ধরার ট্রলার আটলান্টিকের তীর থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে লবস্টার শিকার করে। প্রতি ট্রিপে জেলেরা এক হাজার থেকে বারো শ মণ লবস্টার শিকার করে থাকেন। চিংড়ি থেকে সাগর পাড়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট ডিলারেরা এসব লবস্টার কিনে নিয়ে যান। আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা দেশে রপ্তানি করে থাকেন। প্রতিটি ৫ ডলার করে পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে।

লবস্টার
লবস্টার

গলদা চিংড়িজাতীয় সুস্বাদু খাবার লবস্টার দেখতে যেমন লোভনীয় খেতেও তেমন বেশ সুস্বাদু। মেইন লবস্টার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (এমএলডিএ) নির্বাহী পরিচালক এ্যানি টেসলেকিস বলেন, লবস্টার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রতিবছর মেইন অঙ্গরাজ্যের অর্থনীতিতে এক বিলিয়ন ডলারের অবদান রেখে চলেছে। গেল মার্চে মেইনের কলবে কলেজ ইন ওয়াটারভিলের অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত ‘লবস্টার টু ডলার’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ্যানি টেসলেকিস
এ্যানি টেসলেকিস


তিনি আরও জানান, লবস্টার খাতে বাজারজাত, যোগাযোগ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনসহ সার্বিকভাবে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক খাতে বিরাট অবদান রেখে চলেছে। সম্প্রতি ডিপার্টমেন্ট অব মেরিন রিসার্চের এক জরিপে দেখা যায়, লবস্টার উন্নয়ন ও শিক্ষা খাতে রিসার্চের জন্য কলবে কলেজ ইন ওয়াটারভিলে ৮১ হাজার ৬ শ ৫৭ ডলার ফান্ড দেওয়া হয়েছে। যা মেইন রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।

এমরান হোসাইন: ক্যানসাস, যুক্তরাষ্ট্র।