অন্তরের আকুতি!
হে দয়াময়! এই রমজানে, করি মিনতি
শোনো আমার অন্তরের আকুতি!
বিলীন করে দাও বেদনার নীল পাহাড়!
যে নীল পাহাড় গড়ে উঠেছে,
অর্বুদের মতো তোমার সুন্দর ভুবনে।
অযুত–কোটি রুহের যন্ত্রণা-চিৎকার দহনে।
অসহ্য যন্ত্রণার ক্লেশে কাতর,
নিরপরাধ নিহত-আহত মানুষের আর্তনাদ!
সে নীল পাহাড়ের স্তরে স্তরে যেথা ঘনীভূত,
আহতের ক্ষত থেকে নির্গত—
রক্তের বীভৎস স্রোত, তঞ্চিত হয়ে প্রস্তরে প্রস্তরে জমাট।
আমার নালিশ নেই! আমার অন্তর আজ ক্ষতবিক্ষত!
তোমার বান্দাদের পীড়নে আমি লজ্জিত!
দুনিয়ার মালিক তুমি! দিয়েছ আমাদের বিবেক।
ওই লোভাতুরেরা কেমনে তোমার এ ভূলোকে
আনে ধ্বংস আর অগ্নিজ্বালা! ওদের বিবেক কি সুপ্ত?
দাবি করে, সবাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব আর বুধিতে লায়েক।
হে দয়াময়! এই রমজানে, আমার মিনতি,
ওদের বোধ জাগুক মানবতার।
শ্রেষ্ঠত্বের দাবির অহং তাদের করেছে আমানুষ—
তাদের পশু নামে করি না তিরস্কার,
পশু হবারও যোগ্যতা তাদের নেই।
পশুরা কখনো গড়েনি ভূতলে,
জমাট রক্তের নীল পাহাড়—করেনি ধ্বংস সভ্যতার।
হে দয়াময়! দাও বোধ লোভীদের!
যাদের তরে মানবতার এই দুর্ভোগের পরিণতি!
সত্যকারের মানবতা-বাণী, কোনো ঝলমলে পোশাক নয়,
যা উতরানো যায় আমোদ-প্রমোদলীলার খাতিরে।
নিরুদ্ধ হউক অবধারিত ধ্বংসলীলা!
বিলীন করে দাও বেদনার নীল পাহাড়!
সে বেদনার দানা অবচূর্ণন করে ঝরাও শান্তির নীহার।
*লেখক: জাকিয়া রহমান, ইমিরিটাস আধ্যাপক ও গবেষক, লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়, লিমেরিক, আয়ারল্যান্ড।