দেশে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী প্রথম এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর  ইমেরিটাস অধ্যাপক আতিউর রহমানছবি: সংগৃহীত

অনাবাসী বাংলাদেশি ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কবি–সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মীদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে সাহিত্য সম্মেলন চলবে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সহযোগী হিসেবে যুক্ত থাকবে বাংলা একাডেমি।

গত রোববার বিকেলে বাংলা একাডেমির ভাষাসৈনিক চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর  ইমেরিটাস অধ্যাপক আতিউর রহমান, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুন নবী, অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী, সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম, সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা, তথ্যচিত্র নির্মাতা নাদিম ইকবাল ও সংস্কৃতি-গবেষক পার্থ সারথী মুখার্জি।

তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের বিস্তারিত তুলে ধরে সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম বলেন, ‘এই সাহিত্য সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কবি, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মী ও অনাবাসী বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। প্রবাসীদের লেখা বই, সাহিত্যকর্ম, তাঁদের কাজের স্বীকৃতি সেই অর্থে দেশে খুব একটা উপস্থাপন করা সম্ভব হয় না। এবারের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন আমাদের প্রথম উদ্যোগ। এটি এখন থেকে প্রতিবছর নির্ধারিত সময়ে ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর  ইমেরিটাস অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, ‘বিদেশে যেসব বাংলা সংস্কৃতির চর্চা হয়, সেসব উঠে আসবে এই সাহিত্য সম্মেলনের মাধ্যমে। বিদেশে আমাদের যারা নতুন প্রজন্ম আছে, তাদের কাছে বাঙালি সাহিত্য–সংস্কৃতি তুলে ধরায় সহায়তা করাই এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রবাসে বসবাসরত শিল্প–সাহিত্যে অবদান রাখা ব্যক্তিদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। এ ধরনের একটি সম্মেলন আরও আগে থেকে করা উচিত ছিল।’

একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুন নবী বলেন, ‘এই সাহিত্য সম্মেলন অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। আমি তিন দিনই সম্মেলনে উপস্থিত থাকব। ৩৫ বছর ধরে সম্মেলনের আয়োজকদের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক, তাঁদের সমস্ত কাজের বিষয়ে সব সময় আমার সমর্থন ও শুভকামনা রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৪ সালে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠন দুটির এনআরবি-পিবিওদের (নন–রেসিডেন্স বাংলাদেশ/পিপল অব বাংলাদেশি অরিজিন) শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রচেষ্টার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। এই ২০ বছরে সংগঠনটি তাদের অন্যতম সেতু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০০৫, ২০০৭ ও ২০০৯ সালের সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এনআরবি, পিবিও শব্দ দুটি ব্যাপক পরিচিতি পায়। যার একটি শব্দ অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) ও অপর শব্দটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিক (পিবিও)। এই সম্মেলনের মাধ্যমেই জনতা ব্যাংক এনআরবি শাখা, দেশের তিনটি এনআরবি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা পায়। আমাদের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশি দিবস (এনআরবি ডে) জাতীয় প্রবাসী দিবসে রূপ পায়।

এ সম্মেলনে আট বিভাগে এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন সম্মাননা দেওয়া, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবাসী লেখক-সংস্কৃতিসেবীদের সংবর্ধনা, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রামাণ্যচিত্র ড. নূরুন নবী: আজীবন মুক্তিযোদ্ধা’সহ বিভিন্ন আয়োজন রয়েছে। উল্লেখযোগ্য সেমিনার প্রবাসে বসবাসরত আগামী প্রজন্মকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের করণীয় ও বিশ্বসাহিত্যে বাংলা সাহিত্যের অবস্থান: একটি পর্যালোচনা থাকছে সম্মেলনে।