দক্ষিণ কোরিয়ায় ইপিএস অ্যাওয়ার্ড ও ভিসা সেমিনার অনুষ্ঠিত
ইপিএস বাংলা কমিউনিটি ইন দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্যোগে দেশটির রাজধানী সিউলের ফরেন ওয়ার্কার্স সাপোর্ট সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইপিএস অ্যাওয়ার্ড ও ভিসা সেমিনার-২০২৩।
পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠ এবং বাংলাদেশ ও কোরিয়ার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া কোরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি বিভিন্ন কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথম সচিব কোরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসা করেন এবং করণীয়-বর্জনীয় নিয়ে আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে ইপিএস বাংলা কমিউনিটির কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অন্য বক্তারাও কোরিয়াপ্রবাসীদের দিকনির্দেশনামূলক ও অনুষ্ঠান–সম্পর্কিত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে সাফল্যমণ্ডিত করেন।
অনুষ্ঠানে কোরিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের কথা চিন্তা করে আয়োজন করা হয়েছিল ড্রাইভিং ওয়ার্কশপ কর্মশালার। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সহজ পদ্ধতিতে কীভাবে কোরিয়ান ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়, সে বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইপিএস কর্মীদের কল্যাণার্থে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন সহযোগিতা করার লক্ষ্যে বুথ সেবা পরিচালনা করা হয়। সেখানে বাংলাদেশিরা বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ও অফলাইন সেবা গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ভিসা পরিবর্তনসংক্রান্ত দিকনির্দেশনা। কোরিয়ায় কীভাবে ভিসা পরিবর্তন করে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বসবাস করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করেন কোরিয়ান ইমিগ্রেশন আইনবিশেষজ্ঞ জাং মান ইক। তিনি কীভাবে E-7-4 ভিসা থেকে দীর্ঘস্থায়ী রেসিডেন্ট F-2-99 এবং পারমানেন্ট রেসিডেন্স ভিসা F-5 পরিবর্তন করা যায়, সেই বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন।
এরপর বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য পরিচালিত হয় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রাম। অনুষ্ঠানে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে সর্বমোট নয়জনকে সম্মানিত করার প্রয়াসে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
কোরিয়ায় কর্মস্থলে ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখায় বেস্ট ইপিএস পারসন হিসেবে তিনজনকে নির্বাচিত করে সম্মানসূচক অ্যাওয়ার্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এই ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন রহমত উল্লাহ, স্বপন মণ্ডল ও জহিরুল ইসলাম।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে প্রবাসী আয়। রেমিট্যান্সযোদ্ধা প্রবাসীদের অনুপ্রেরণা ও বৈধভাবে প্রবাসী আয় প্রেরণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে প্রদান করা হয় বেস্ট রেমিট্যান্স সেন্ডার অ্যাওয়ার্ড। সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রবাসী আয় প্রেরণকারী তিনজনকে নির্বাচিত করে সম্মানসূচক অ্যাওয়ার্ড এবং সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেন মো. রাশেদুর রহমান, ফখরুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান।
উদ্যোক্তারা সব সময় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মুনাফা অর্জন করে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে চলেছেন। সেই উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা প্রদান করার লক্ষ্যে সেরা ইপিএস উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে এবারে নির্বাচিত হয়ে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন মোহাম্মদ শামীম।
বিশেষ সম্মাননা ক্যাটাগরিতে ফ্রেন্ড অব বাংলাদেশ বিভাগে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করে বাংলাদেশিদের পাশে থাকায় ইমিগ্রেশন আইনবিশেষজ্ঞ জাং মান ইককে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
এ ছাড়াও ইপিএস বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। ইপিএস বাংলা কমিউনিটি আর্থিক সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করার প্রয়াসে বেস্ট অ্যাসোসিয়েট পার্টনার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে থাকে। চলতি বছর বিভিন্ন প্রোগ্রামে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করায় এস এন ফুড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী এম আই ছোটনকে বেস্ট অ্যাসোসিয়েট পার্টনার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত বাংলাদেশিদের দেশীয় খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
লেখক: নয়ন কুমার দে, সহসভাপতি, ইপিএস বাংলা কমিউনিটি ইন কোরিয়া