উৎসবে–আনন্দে লন্ডনে বাংলাদেশি বইমেলা

বইমেলার শুভ উদ্বোধন করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও লেখক নুরুন্নবী
ছবি: প্রথম আলো

লেখক, পাঠক ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুই দিনব্যাপী বইমেলা। ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর ইস্ট লন্ডনের দ্য আর্ট প্যাভিলিয়ন হলে ১১তম এ বইমেলার আয়োজন করে সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য।

১০ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী লেখক নুরুন্নবী। উদীচী সত্যেন সেন স্কুলের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী পর্ব।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি এ কে এম আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে সভাপতি কবি ময়নূর রহমান বাবুল আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানান। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘লন্ডনে এমন ব্যাপক পরিসরে বইমেলার উদ্বোধন করতে পেরে সত্যিই আমি আনন্দিত। বাংলাদেশের বাইরে এত সুন্দর আয়োজন আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

উদ্বোধনী পর্বে মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন অতিথিরা। প্রথম দিনেই পাঠক–লেখকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল মেলায়। এ বছর সাহিত্য সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী কবি হামিদ মোহাম্মদকে।

মেলায় বাংলাদেশের ১৭টি প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠান বই নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি এ বইমেলা উপলক্ষে ২১টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন নিয়েও আগত ব্যক্তিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল।

মেলার মঞ্চে ছিল শিশুদের নানা রকম সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, সাহিত্যালোচনা, সাহিত্য পুরস্কার প্রদান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি, সাহিত্যবিষয়ক সেমিনার, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, অ্যাপাসেন লার্নারস কালচারাল গ্রুপের পরিবেশনা, স্বরচিত কবিতা পাঠ, প্রকাশকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ক্রেস্ট প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। পাঠক–লেখকদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

মেলায় বাংলাদেশের ১৭টি প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠান বই নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি বইমেলা উপলক্ষে ২১টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে প্রকাশিত বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

অভ্র প্রকাশনীর স্টলে কথা হয় বাচিকশিল্পী মুনিরা পারভীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বছরে একবার এই নতুন বইয়ের জন্য অপেক্ষায় থাকি। ব্রিটেনে বাংলা বই পাওয়ার এখন একমাত্র উপায় এই বাংলাদেশি বইমেলা। আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী, তাদের জন্য এই বইমেলা যে কতটা আনন্দের, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’
সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের সভাপতি কবি ময়নূর রহমান বাবুল বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন বাংলা বইমেলা হচ্ছে। কিন্তু একুশে বইমেলার বাইরে এবং বাংলাদেশের বাইরে কোনো বইমেলাকে কেন্দ্র করে ২০টির অধিক বইয়ের প্রকাশনা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আর সেটি সম্ভব হয়েছে বিগত মেলাগুলোয় পাঠকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে। আমরা আশা রাখি, দিন দিন সেই কলেবর বৃদ্ধি পাবে।’