বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মন্ট্রিয়েলে বিক্ষোভ পদযাত্রা

বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও জাতিগত সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন; মন্দির, বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গত রোববার (১৮ আগস্ট) মন্ট্রিয়েলে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মন্ট্রিয়েলপ্রবাসী হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সের শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেন। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে কানাডার বিভিন্ন শহরে চলমান ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে মন্ট্রিয়েলে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতার সুদীর্ঘ পদযাত্রায় উত্তাল হয়ে ওঠে মন্ট্রিয়েলের অভিবাসী-অধ্যুষিত এলাকা পার্ক এক্সটেনশন।

প্রথমে বেলা ১১টায় মন্ট্রিয়েলের পার্ক এক্সটেনশনের এথেনা পার্কে দলে দলে সবাই জমায়েত হন। সেখানে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। তাঁরা বাংলাদেশে নির্বাচন ও যেকোনো রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে সরকারগুলোর নীরব ভূমিকা দুর্বৃত্তদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদ হিসেবেই গণ্য করা যায় বলে অভিযোগ করেন সমাবেশে আগত লোকজন। সমাবেশে এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসহ প্রভাবশালী বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে পদক্ষেপ গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং শুধু কথায় নয়; বাস্তবে ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়।

এ ছাড়া তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টা, সেনাপ্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দেশে যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার যে ‘অভয়’ দিয়ে যাচ্ছেন, বাস্তবে যেন এটি প্রকৃত অর্থে দ্রুতই দৃশ্যমান হয়, সেটি নিশ্চিত করারও দাবি জানান।

এরপর সমাবেশটি পার্শ্ববর্তী সড়কগুলো ঘুরে পুনরায় এথেনা পার্কে ফিরে আসে। স্লোগানে মুখর পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড। মূলধারার লোকজনও হাত নাড়িয়ে তাঁদের সমর্থন জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রায় কানাডায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্থানীয় হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক শিশু-কিশোর ও তরুণ-যুবকের অংশগ্রহণ লক্ষণীয় ছিল। সিবিসিসহ কানাডার মূলধারার অন্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও কর্মসূচিটি কাভার করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।