স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করল ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল
ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল ২৬ মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করেছে। গত রোববার বাংলা স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ছাত্রছাত্রীরা মুক্তিযুদ্ধের ছবি এঁকে, মুক্তিসংগ্রামের বীরত্বগাঁথা জেনে, কবিতা পড়ে, গান গেয়ে, বীর মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিকথা শুনে স্বাধীনতার ৫২তম বর্ষকে স্মরণ করেছে। স্কুলের নিয়মিত বাংলা ক্লাসে চিত্রাঙ্কন ও হারমনি ডে-এর আলোচনা শেষে বেলা ১১টায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও কার্যকরী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলা স্কুলের সাধারণ সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান সবাইকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। প্রথমেই বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।
স্কুলের কার্যকরী কমিটির সহসভাপতি ফায়সাল খালিদ শুভ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও এর বীরত্বগাঁথার ইতিবৃত্ত এই প্রজন্মের ভাষায় তুলে ধরেন। কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ রচিত ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কবিতাটি পাঠ করেন শ্রেণি শিক্ষক বিশাখা পাশ। এর পরপরই অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হন স্বাধীনতাসংগ্রামের বীর সেনানী কমল সিদ্দিকী (বীর উত্তম)। এই জাতীয় বীর তাঁর যুদ্ধ দিনের স্মৃতিচারণা করেন। এই পর্বটি সঞ্চালনা ও পরিচালনা করেন কাজী আশফাক রহমান। এই পর্যায়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন জনাব সিদ্দিকীর সহযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন। এই দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আরও উপস্থিত ছিলেন বারডিয়া বাংলা পাঠশালার সভাপতি রফিক ইসলাম।
পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় ও শেষ পর্বে স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও কার্যকরী কমিটির সদস্যরা একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। দলগত ও একক পরিবেশনা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের নামের প্রতি সুবিচার করতে সক্ষম হয়। এই পর্বে অংশ নেয় নাশভা, রুখসার, মাহরুস, অনিরুদ্ধ, আমীনা, অর্না, মারজান, অলিভিয়া, নুসাইবা, রুশনান, স্বপ্নীল, জেইনা ও জাহিয়া।
দেশাত্মবোধক গানের দরদ ভরা পরিবেশনা এনে সবাইকে বিমোহিত করেন স্কুলের সংগীত শিক্ষক জয়তী রায় সোমা। অধ্যক্ষ রুমানা খান মোনা ছাত্রছাত্রীসহ সবাইকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রুমি বীর বীক্রম ও তাঁর মা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের দেশপ্রেমের অসাধারণ সত্য গল্প বলেন। স্বাধীনতা ও অন্যান্য জাতীয় দিবসের প্রয়োজনীয়তা ও প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করেন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আনজুমান আরা আইরিন। ছাত্রছাত্রীদের গল্প বলে শোনান শ্রেণি শিক্ষক শায়লা ইয়াসমিন নুসরাত, সায়মা হক ও নুসরাত মৌরি। বেলা একটায় বাংলা স্কুল সভাপতি মসিউল আযম খান স্বপন সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এ পর্বে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন শ্রেণি শিক্ষক অনিতা মণ্ডল।
প্রধান সমন্বয়কারী নাজমুল আহসান খানের পরিচালনায় ও অধ্যক্ষ রুমানা খান মোনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ অনুষ্ঠানে শব্দ নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেন ফায়সাল খালিদ শুভ ও মশিউল আযম খান স্বপন। তবলায় সংগত করেন বিজয় সাহা। কারিগরি নিয়ন্ত্রণে ছিলেন মাহবুব শাহরিয়ার। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ইয়াকুব আলী ও নুরুল ইসলাম শাহিন। সহযোগিতায় ছিলেন মোস্তফা হাসান, আজিজ রহমান, গোলাম কিবরিয়া, সুমিত রায়, তাবাসসুম হক ও সৈয়দা দিশা।
উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল জাতিধর্ম–নির্বিশেষে সব বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য প্রতি রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে।