ঘুরে এলাম বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী বন্দর নগরী ‘কুক্স হাফেন’

ছবি: লেখক

দেশের একজন ভ্রমণপিয়াসি মানুষ ‘তারেক অণু’। তিনিই পৃথিবীর সাতটি মহাদেশ এবং শতাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। দিন ১৫ আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে ঘুরে আসার পর তিনি প্রথম আলোতে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ছোট্ট একটি জীবনের বেশির ভাগ মানুষই জীবনের স্বাদ এবং জীবনকে উপলব্ধি করতে পারে না।

মানুষের উচিত তার নিজের জীবনকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করা এবং প্রতিদিন একটু হলেও ভ্রমণ করা। দূরে যেতে না পারলেও অন্তত পাশের গ্রামে, পাড়ায় বা মহল্লায় ঘুরে আসা।’

ছবি: লেখক

কথাটি আমার মনে খুব দাগ কেটে যায়। তাই অফিস শেষ করে হঠাৎ ঝটিকা সফরে ঘুরে এলাম জার্মানির একসময়ের ব্যস্ততম বন্দর নগরী ‘কুক্স হাফেন’।

চলুন জেনে নেওয়া যাক জার্মানির কুক্স হাফেন বন্দর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। জার্মানির পোর্ট সিটিখ্যাত হামবুর্গ থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরত্বে কুক্স হাফেন অবস্থিত। ভৌগোলিক দিক দিয়ে কুক্স হাফেন শহরটি নর্থ সির তীরে অবস্থিত এবং জার্মানির অন্যতম এলবে নদীর উৎপত্তিস্থল বলা যেতে পারে।

একসময় এটি ছিল একটি ব্যস্ততম বন্দর, বর্তমানে হামবুর্গ এবং ব্রেমেন বন্দরের চাহিদা বাড়ায় কুক্স হাফেনের কদর কিছুটা কমেছে। তবু দৈনিক ১৫ থেকে ২০টি জাহাজ এই বন্দরে নোঙর করে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লন্ডন, সাউদাম্পটন এবং লিভারপুল থেকে নিয়মিত যাত্রী পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো কুক্স হাফেন বন্দর।

এখনো শহরটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ব্যবহৃত জাহাজের কিছু নিদর্শনস্বরূপ একটি জাদুঘর রয়েছে।

ছবি: লেখক

বর্তমানে জার্মানির গাড়ি কোম্পানিগুলো তাদের গাড়ি পরিবহনকারী জাহাজগুলো নোঙর করতে বন্দরটি বেশি ব্যবহার করে। লিভারপুল ও কুক্স হাফেনের মধ্যে নিয়মিত গাড়ি পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করে থাকে।

পর্যটকদের কাছে শহরটি খুবই পছন্দের, বিশেষ করে যা%রা ভ্রমণকালীন মাছ শিকার করতে পছন্দ করেন। তাঁরা প্রায়ই প্রতিবছর এ শহরে চলে আসেন এবং ছোট ছোট পালতোলা নৌকা ভাড়া করে নর্থ সিতে মাছ শিকার করতে বেরিয়ে পড়েন।

ছবি: লেখক

শহরটি খুবই পরিচ্ছন্ন এবং গোছানো। পরিবেশের কথা চিন্তা করে শহরটিতে বলতে গেলে সব যানবাহনই বিদ্যুৎ-চালিত। যেকোনো পর্যটক হেঁটেই শহরটি প্রদক্ষিণ করতে পারবেন এবং সাধারণত সমুদ্রের কোলে বসে সূর্যাস্ত দেখা পর্যটকদের কাছে খুবই মনোরম দৃশ্য।

ছবি: সংগৃহীত

এমনকি পর্যটকেরা কুক্স হাফেন বন্দরে জেটি থেকে পৃথিবীর বড় বড় জাহাজ চলাচল খুব কাছ থেকে দেখতে পারেন। জার্মানিতে ভ্রমণকারী যেকোনো পর্যটক চাইলে নিরিবিলি মনোরম কুক্স হাফেন শহরটি ভ্রমণ করে আসতে পারেন।