রাশিয়ায় বিশ্ব যুব উৎসবে বাংলাদেশি তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ
রাশিয়ায় বিশ্বের যুব প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল-২০২৪। বৈশ্বিক এ আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেছে ৯৫ জন তরুণ-তরুণী, যারা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছে নিজেদের দেশকে। বিশ্বের প্রায় ১৮০টি দেশ থেকে এ উৎসবে অংশ নিয়েছেন ২০ হাজার যুব প্রতিনিধি।
১ থেকে ৭ মার্চ সপ্তাহব্যাপী ফেস্টিভ্যালটি কৃষ্ণসাগরের উত্তর-পূর্ব উপকূলের শহর সোচিতে অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে মানবিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালে ৯৫ জন তরুণ সুযোগ পায়। এর মধ্যে ৫৩ জনের সব খরচ বহন করে রাশিয়া। এ উৎসবে অংশ নিতে এবার প্রায় ১৮০টি দেশের ৩ লাখ ৯ হাজার ৫৪২টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে থেকে ১০ হাজার বিদেশি এবং ১০ হাজার রাশিয়ান অংশগ্রহণ করে এই মেগা ইভেন্টে। এ ছাড়া মূল আয়োজন শেষে কিছু অংশগ্রহণকারী ফেস্টিভ্যালের অংশ হিসেবে সুযোগ পান রিজিওনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য। এ রিজিওনাল প্রোগ্রামে তরুণ প্রতিনিধিরা রাশিয়ার ভিন্ন ভিন্ন ৩০টি শহরে এক সপ্তাহ অবস্থানের সুযোগ পাবেন।
উৎসবের মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের একটি প্রদর্শনী, যা রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার, পোশাক এবং সংস্কৃতি প্রদর্শন করে; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির একটি প্রদর্শনী, বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন; বিভিন্ন বিষয়ে কর্মশালা ও আলোচনা সভা। এ ছাড়া রাশিয়ার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা এবং বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করা এ উৎসবের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এ উৎসবের ভেন্যুতে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জন্য একটি স্টল নেওয়া হয়েছে। এ স্টল থেকে উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা হয়। বিশ্ব যুব উৎসবের বাংলাদেশ প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান তারেক মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন হায়দার রাশিয়া সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় উৎসবে যোগদানকারী বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন।
যুব উৎসবে নানা আয়োজনে বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধিরা তাঁদের দক্ষতা ও প্রতিভার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে উৎসবে অংশগ্রহণকারী সবাইকে মুগ্ধ করেছে। ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একটি স্টলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, পর্যটন, লোক ও হস্তশিল্প, মেহেদি উৎসব, মৃৎশিল্প, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পাটের থলে এবং মুদ্রা প্রদর্শনী করা হয়। তা ছাড়া উৎসবে বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন কর্মশালা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলায়, বিজ্ঞানবিষয়ক সেমিনারসহ সব ক্ষেত্রেই অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা তাঁদের জাতীয় মর্যাদা উজ্জ্বল করে তুলেছেন এ আয়োজনের ১৮০টি দেশের কাছে। তাঁরা বিশ্বদরবারে তুলে ধরেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাস।
বিশ্ব যুব উৎসবের বাংলাদেশ প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান তারেক মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন হায়দার রাশিয়া সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় উৎসবে যোগদানকারী বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন।
কর্মদক্ষতা, এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিস, সাংস্কৃতিক অন্তর্ভুক্তি, সামাজিক কার্যক্রম, শিক্ষা, বিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, দাতব্য কাজ, ক্রীড়া, ব্যবসা ও গণমাধ্যম ইত্যাদি ক্ষেত্রে যেসব তরুণ অসামান্য অবদান রেখেছেন, তাঁরা এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আন্তর্জাতিক যুব সহযোগিতা বাড়ানোর আদেশ অনুসারে ২০২৪ সালে দেশটিতে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।