বইপ্রেমীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও স্পন্দনে শেষ ১৮তম টরন্টো বইমেলা
প্রবাসী কবি-সাহিত্যিক ও লেখকদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও স্পন্দনে শেষ হলো অন্যমেলা আয়োজিত ১৮তম টরন্টো বইমেলা ২০২৪। গ্রীষ্মের শুরুতে ১ ও ২ জুন শনি ও রোববার ‘প্রজন্মের কাছে বাংলা’ স্লোগানে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় টরন্টো বাঙালিপাড়ার কেন্দ্রস্থলে ১৫ চিজম অ্যাভিনিউতে অবস্থিত ‘দ্য ডন অব ড্যানফোর্থ’ মিলনায়তনে। বইমেলা হলের অনতিদূরের ডেন্টোনিয়া পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে বেলুন উড়িয়ে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন টরন্টোর বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মো. ফারুক হোসেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বইমেলা ২০২৪-এর আহ্বায়ক সাদী আহমদ। নিউইয়র্ক থেকে আসা কবি কাজী জহিরুল ইসলাম টরন্টো বইমেলার মতো ঢাকার একুশে বইমেলাও জাতীয় শহীদ মিনারে উদ্বোধন করার প্রস্তাব করেন। অনেকেই তাঁদের বক্তব্যে বইমেলার উদ্বোধনের সুন্দর আবহ সংগীতটিকে টরন্টো বইমেলার স্থায়ী আবহ সংগীত হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাব করেছেন।
শুধু টরন্টো নয়, সারা কানাডার বইপ্রেমীরা সমবেত হন টরন্টো বইমেলায়। মুক্তধারা আয়োজিত নিউইয়র্ক বইমেলার পরপরই অন্যমেলা আয়োজিত টরন্টো বইমেলার আয়োজন থাকে, তাই উত্তর আমেরিকার লেখক, বুদ্ধিজীবী, বইপ্রেমী ও বাংলাদেশ থেকে আসা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো এই মেলায় যোগ দেন এবং প্রবাসীদের মধ্যে লেখালেখি ও বই-পুস্তক সংগ্রহের একটা বিশেষ পরিবেশ তৈরি হয়। সব বয়সী ও টরন্টোর বাইরের অনেক শহর থেকেও বিপুলসংখ্যক বইপ্রেমী ও সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ মেলায় যোগ দেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদার বইমেলা উদ্বোধনের কথা থাকলেও নানা কারণে তিনি টরন্টো পৌঁছাতে পারেননি। অতিথি আলোচক হিসেবে ঢাকা থেকে আসা গবেষক ও কবি শিহাব শাহরিয়ার ছিলেন অন্যতম আকর্ষণ। সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিদের অনুষ্ঠান স্বরচিত কবিতা পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, শিশু-কিশোরদের আনন্দ উৎসব, লেখক ও প্রকাশক পরিচিতি ও মুখোমুখি আলোচনা। আলোচনা পর্বের বিষয়বস্তু ছিল সাংবাদিকতা, নাটক, কবিতা, নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ, অনুবাদ সাহিত্য, সদ্য প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরী, সংগীতশিল্পী মোহাম্মাদ সাদী, টরন্টোর সংগীত ব্যক্তিত্ব ও উদীচীর সাবেক সংগঠক মো. নুর আলম লাল।
ঢাকার প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও পারেনি। যোগ দিয়েছে সময় প্রকাশন, অনন্যা প্রকাশনী ও ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ। টরন্টোপ্রবাসী লেখকদের প্রকাশিত অনেকগুলো বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়। এ ছাড়া ১ জুন দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় বইমেলার একটি বিশেষ অধিবেশন, ‘দশম উত্তর আমেরিকা কবিতা উৎসব’। কবিতা উৎসবের স্লোগান ছিল, ‘কবিতা মনে প্রাণে জ্বালাক সত্যের অনির্বাণ শিখা’।