একটা বন্ধ দরজা

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

কেউ আছেন? আছেন কি কেউ ঘরে?

ডেকে চলেছে সে বন্ধ দুয়ারে করাঘাত করে।

নেই কোনো সাড়াশব্দ, তবুও কিছুক্ষণ পরে পরে,

একইভাবে ডেকে চলেছে সে দরজার কড়া নেড়ে নেড়ে।

কৌতূহলী কিছু চোখ উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে দেখছে,

ভাবছে, হয়তো সে প্রিয়জনের বার্তা নিয়ে এসেছে।

ততক্ষণে দুয়ার খুলে বেরিয়ে এলেন এক প্রবীণা,

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া দেহ, ক্ষীণ দৃষ্টি, মলিন বসনা।

বললেন, কী চাই? কিসের এত হট্টগোল?

আগুন্তুকের দুটি চোখ দীপ্ত ছটায় উজ্জ্বল!

কাছে গিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে হাত দুটো ধরে,

বললো, আমি এসেছি; দেখো, আমি এসেছি তোমার ঘরে।

কে? কে তুমি? ক্ষীণ দৃষ্টি প্রসারিত করে শুধালেন প্রবীণা,

ভালো করে ছুঁয়ে দেখতো, আমায় চিনতে পারো কি না?

ছেলেটির সিক্ত কপোলে করতল ছুঁয়ে আবেগে ভেঙে পড়লেন তিনি,

বুকেতে জড়িয়ে ধরে বললেন, ওরে চিনি, আমি তোরে চিনি!

পিতামহী আর পৌত্রের সেই অপূর্ব মিলনক্ষণে,

বাঁধভাঙা আনন্দাশ্রুতে ভেসে গেলেন দুজনে।

শুধু অনুভবে–ই হলো বলা না–বলা কথা যত,

উষ্ণ অনুভূতির সঞ্চারে নিরাময় হলো হৃদয়ের ক্ষত।

একটা বন্ধ দরজা, আর কিছু পুরোনো কথা,

দরজার ওপারে ছিল এক অভিমানী নারীসত্তা, বুকে ছিল চরম ব্যথা।

কে এই প্রবীণা? সেদিনের সেই প্রতাপশালী মহীয়সী রানি,

কালের স্রোতে অন্ধকারে নিমজ্জিত আজ তার জীবনকাহিনি।

লেখক
‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]