আম্মা, তোমাকে খুব মনে পড়ছে

মা
অলংকরণ: সোহাগ পারভেজ

প্রিয় আম্মা, আসসালামু আলাইকুম। আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ো। অনেক দিন হলো তোমাকে দেখি না১ দেশে থাকতে এক শুক্রবার ছেলেমেয়ের সঙ্গে ঢাকায় তো পরের শুক্রবার তোমার কাছে কুমিল্লা চলে যেতাম। আর এখন এত দূরে চলে এলাম, ইচ্ছা করলেই যেতে পারছি না। এটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়।

করোনার সময় যখন সব যানবাহন বন্ধ ছিল, তখনো তোমার কাছে চলে গিয়েছিলাম ঈদ করতে। আর এ কোরবানির ঈদ! তোমার সঙ্গে কাটাতে পারলাম না...তোমার হাতের রান্না করা গরুর গোশত আমার খুব প্রিয়।

খুব বেশি মনে পড়ে তোমাকে...ছোট বোন শেলী ও ছোট ভাই শরীফের ভাগ্য অনেক ভালো, কারণ তারা সব সময় তোমাকে দেখতে পায়। আর আমি অনেক দূরে চলে আসছি।

অনেক কষ্ট করেছ আমাদের মানুষ করতে। সেই ২০০১ সালে আব্বাকে হারালাম, যার কষ্ট তেমন বুঝতে দাওনি আমাদের। সেই থেকে তুমি আমাদের আম্মা ও আব্বা দুটোই। তুমি সবচেয়ে ভালো বন্ধু আমাদের। কোনো কিছু বলার আগেই বুঝতে পারো।

এক মাস হয়ে গেছে আমার প্রবাসজীবন। তোমাকে সব সময় খুব মনে পড়ে। আমার রাজকুমারী মালিহা আমাকে বলে, বাবা, তুমি কিন্তু প্রতিদিন দাদুকে ফোন দেবে...বুঝেছ? আমি প্রতিদিন দাদুকে ফোন দিয়ে কথা বলি। আরেক দিন আমাকে আবার বলল, বাবা, দাদুকে কি ফোন দিয়েছ? দাদুকে ভিডিও কল দিয়ে দেখবে, সঙ্গে মালহানকেও দেখতে পাবে।

মালিহার চেহারা ঠিক তোমার প্রতিচ্ছবি, কথাবার্তার ধরন এবং হাসিটা তোমার মতোই।

আমার জন্য সব সময় দোয়া করবে, তোমার দোয়া ছাড়া জীবনযাপন সহজ হবে না আমার। যখনই আমি কোনো অসুস্থতায় ভুগতাম, মনে হতো তোমাকে দেখলেই সুস্থ হয়ে যাব এবং সঙ্গে সঙ্গে তোমার কাছে চলে যেতাম। যে-ই তোমাকে দেখতে পেতাম, শরীর ও মনের সব ক্লান্তি তখন কোথায় যে হারিয়ে যেত।

একবার জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪০ দিন বাসায় ছিলাম। যে-ই একটু সুস্থ বোধ করলাম, তোমার কাছে চলে গিয়েছিলাম। তার পর থেকে অফিস শুরু করেছিলাম।
বাসার চারপাশটা চোখে ভাসে।

শেষে আবারও বলি, আমার জন্য দোয়া করবে, নিজের প্রতি খেয়াল রাখবে, যদিও ছোট ভাই শরীফ তোমার খুব ভালো খেয়াল রাখে এবং ছোট বোন শেলীও।

  • লেখক: মো. মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত