বিষাদগাঁথা অথবা এলিজি

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

অক্টোবর নিয়ে দু–কলম লিখতে গেলেই মনে পড়ে যায় বহু সেপিয়া রঙের দুপুরে চিলেকোঠার ঘরের দেয়ালে লাল রং দিয়ে কারও নামে ঋতু উৎসর্গ করা। সেসব দুপুরের পরের বিকেলগুলো অহেতুক হলুদ। ফুরিয়ে আসছি ধীরে ধীরে। তবু জানি, গান আছে, কবিতা আছে, শূন্যে আছড়ে পড়া একটা হৃদয় আছে; বহু অপ্রাপ্তির মধ্যে এসব তো ভোলার নয়। কারোর সামান্য সান্নিধ্য পেতে চেয়েছিল একটি এক কিশোরী। তীব্র মধ্যম সুরে লাগেনি। তারপর আর কারোর কাছে যেতে ইচ্ছে হয়নি তার। বরং এটাই ভেবে গেছে সে, কেউ যেন কখনো তার জন্য অপেক্ষা না করে। অপেক্ষা আসলে একটা নদীর ধারাভাষ্য। অন্তহীন বিষাদ পেরিয়ে যে তীরে পৌঁছানো যায়, সেই নদীতীরের নামই হয়তো অপেক্ষা।

অনেকটা নদীপথ পেরিয়ে থিতু হতে হয়েছে এক গল্পকথকের জন্য, যিনি সর্বক্ষণ যেন একটা গল্প বলে যেতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না। অথচ তাঁর চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসছে কত সব যন্ত্রণার আঁচড়। ভালোবাসা নামে যেসব অনুভূতিকে ডাকি, তাদের গায়ে হাত রাখলে কি যন্ত্রণা ধারণ করা মানুষটির দুঃখ গায়েব হয়ে যাবে?

‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

শতাব্দীর পর শতাব্দী হেঁটে চলা মঙ্গলকাব্য কিংবা পুরাণের গান থেকে উঠে আসা চরিত্রদের ক্লান্তি মালুম হয় কম, তারা পথিক, তাই লিখে রাখে পথের দৃশ্য। মাথার ভেতরের এসব অলীক ভাবনা দিয়ে বিনিসুতোর মালা গাঁথে মেয়েটি। মালা তো নয়, আসলে এ তো গান। আমাদের অজান্তে আমাদের ভেতরে যে নিরন্তর ধ্বনি ঢুকে পড়ছে প্রতিনিয়ত, তার সামান্যও যদি গাইতে পারতাম! এই সামান্যের কাছে হাত পেতে যেটুকু কুড়িয়ে পাওয়া গেছে, তা দিয়েই মেয়েটির কিশোরীবেলার গান গাঁথা রয়েছে।