বাংলা সিনেমা নিয়ে সিউলে দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া চলচ্চিত্র উৎসব
চলচ্চিত্র সব সময় একটি দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আর্থসামাজিক অবস্থানকে সারা বিশ্বে তুলে ধরে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস বেশ পুরোনো।
পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত সিনেমা এই অঞ্চলে নির্মিত হয়েছে। সেই সব সিনেমার প্রেক্ষিত ও আধুনিক সিনেমার কথা দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের কাছে তুলে ধরতে দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করা হয়েছিল। কালারফুল এশিয়া ধারণাকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া তিন দিনব্যাপী এই উৎসব আয়োজন করে। গত ২৯ থেকে ৩১ জুলাই কোরিয়ার রাজধানী সিউলে দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া চলচিত্র উৎসবে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সিনেমা প্রদর্শিত হয়। চলচিত্র উৎসবটি সহযোগিতা করছে কোরিয়ান ফিল্ম কাউন্সিল।
সিউলের অন্যতম জনবহুল জায়গা হংদেতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী চলচিত্র উৎসবটি শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কোরিয়ার বিভিন্ন সংগঠনের দক্ষিণ এশিয়ান সদস্যবৃন্দ, বুসান চলচিত্র উৎসবের সদস্যরা অংশ নেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও কোরিয়ার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ভারতীয় নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন কোরিয়ার সদস্যরা। বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার সভাপতি মাহবুব লি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি বিকাশের চেষ্টা করছি। এ ধরনের চলচ্চিত্র উৎসব সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিকাশের মাধ্যমে বৈশ্বিক একতাবোধ বাড়ানোর কাজ করছে। উদ্বোধনী আয়োজনে ভিডিওর মাধ্যমে অংশ নেন অনুপম ত্রিপাঠি। অনুপম বিশ্বজুড়ে আলোচিত নেটফ্লিক্স টিভি সিরিজ স্কুইড গেমে আলী চরিত্রে অভিনয় করেন। উৎসবে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান পরিচালক ও প্রযোজক আবু শাহেদ ইমন।’
এই বছর উৎসবে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের ১৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য, ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রদর্শিত হয়। বাংলাদেশ ও কলকাতার যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘মায়ার জঞ্জাল’, নুহাশ হুমায়ূনের শর্টফিল্ম ‘মশারী’, আবু শাহেদ ইমনের ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’, ভারতের ‘ভাজাক্কু’, ‘পেদ্রো’, ‘ডিপ ৬’, শ্রীলঙ্কার ‘আয়ু’ ও ভুটানের অস্কার মনোনীত ছবি ‘লুনানা-এ ইয়াক ইন দ্য ক্লাসরুম’ প্রদর্শিত হয়।
স্পেশাল ডায়াস্পোরা বিভাগে প্রদর্শিত হয় দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি অভিনেতা ও নির্মাতাদের বানানো ডকুমেন্টারি ও ফিকশন ফিল্ম। বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার সাধারণ সম্পাদক তাবাসসুম নাসরিন বলেন, সিনেমা জীবনের কথা বলে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি কোরিয়াতে প্রচারের মাধ্যমে আমরা তরুণ প্রজন্মের কাছে আর্থসামাজিক অবস্থা ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ বিজ্ঞপ্তি