দিনাজপুরে ইবি শিক্ষার্থীদের ঈদ পুনর্মিলনী

ঈদের খুশি শুধু নতুন পোশাকে সীমাবদ্ধ নয়, মহিমান্বিত এই উৎসবের যথার্থতা সম্প্রীতি আর ঐক্যে। ভালো স্মৃতিতে ঈদ হয়ে উঠে আমাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকা ভ্রাতৃত্ব-ভালোবাসার উপলক্ষ। এবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনাজপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির আয়োজনে উদযাপন করা হলো তেমনই স্মরণীয় ঈদ পুনর্মিলনী। অনুষ্ঠানটি শুধু একটি আয়োজনই ছিল না; ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজ নীড়ে বন্ধন দৃঢ়করণে উদ্দীপনার অনন্য এক মিলনমেলা।

গত মঙ্গলবার (১০ জুন) দিনাজপুর জেলা সদরের একটি রেস্টুরেন্টে এই আয়োজন করা হয়। দুপুর থেকেই সবাই আসতে শুরু করে। একদিকে কারো প্রিয় সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা, আবার অন্যদিকে নতুনদের সঙ্গে পরিচয়। কিছুক্ষণ পরেই উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের কেউ সদ্য গ্রাজুয়েট শেষ করেছে, আবার কেউ অধ্যয়নরত; এখানে বয়স-পেশার বাইরে সবাই একটাই পরিচয় ‘দিনাজপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’ পরিবারের সদস্য।

আয়োজনে শুরুতেই খাওয়া-দাওয়া, তারপর পরিচিতি পর্ব হয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয়। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শামীম আহমেদ শুভ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রায়হান জামিল।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাটা পাথ লিমিটেডের টেকনিক্যাল ম্যানেজার ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এহসানুল হক, দিনাজপুর গোর-এ শহীদ ঈদগাহ ময়দানের প্রধান ইমাম ও কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন উথরাইল সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক ও আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আরমানুল ইসলাম, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সুইচ বোর্ড অ্যাটেনডেন্ট ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রায়হান কবির। দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও ধর্মীয় আলোচক হারুন অর রশীদ।

অনুষ্ঠানে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের গল্প, কর্মমুখী জীবন ও শিক্ষাজীবনের স্মৃতি ভাগাভাগি করে ও অনুপ্রেরণা দিয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে রেখেছিলেন বক্তারা। একটু গল্প-স্মৃতি, আবার কিছু মোটিভেশনাল কথা — এভাবেই সময় গড়াতে থাকলো। সবকিছু মিলিয়ে দিনটি যেন হয়ে উঠলো অন্যরকম স্মরণীয় একটি দিন।

সাবেক শিক্ষার্থীরা বলেন, 'এই পুনর্মিলনী উদযাপন প্রতিবছরই অব্যাহত থাকুক। ছোট পরিসরের আয়োজনটি সামনে আরও বড় পরিসরে করতে আমরা সবাই একসাথে চেষ্টা করব। আজকেই এই সুন্দর আয়োজনে সকলের সাথে একত্রিত হতে পেরে অনেক ভালো অনুভব হচ্ছে। এই আয়োজন সকলের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে বেশ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশাবাদী।'

প্রসঙ্গত, দিনাজপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির এই আয়োজন ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও সম্মিলিত বন্ধনের এই অনন্য উদাহরণ। এই সৌহার্দ্য সময়ের পরিক্রমায় আরও বিস্তৃত হোক— সবাই এই শুভকামনাই রাখেন।

• লেখক: রানা আহম্মেদ অভি, শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়