শরৎ উৎসব–আ ডে ইন অটাম
গত ১৫ অক্টোবরে বিপুল উৎসাহ–উদ্দীপনা আর আনন্দের মধ্য দিয়ে নরওয়ের স্টাভাঙ্গার সিটির সুন্দে কিরনেভিক কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শরৎ উৎসব (আ ডে ইন অটাম)।
জ্বালানি তেল অধ্যুষিত দেশ নরওয়ে। আর বড় বড় তেল কোম্পানিগুলোর হেড অফিস সব বিশেষত স্টাভাঙ্গার ও তার আশেপাশে হওয়াতে স্টাভাঙ্গারকে নরওয়ের অয়েল ক্যাপিটাল বলা হয়ে থাকে। এখানে বসবাসকারী লোকজন বেশিরভাগ তেল কোম্পানিতে চাকরি করেন।
১৭–১৮ বছর আগেও আমরা এখানে ছিলাম হাতে গোনা এক দুইটি বাংলাদেশি পরিবার। এ সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে অনেক হয়েছে। প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি ছাত্র–ছাত্রী পড়তে আসছেন। পড়াশোনা শেষে ভালো ফল থাকলে চাকরিও পেয়ে যাচ্ছেন। মেধা ও দক্ষতার গুণে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি কর্মক্ষেত্রে খুব সুনাম ও ভালো অবস্থানে আছেন।
যাই হোক, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েক বছর কমিউনিটি হল ভাড়া করে সবাই মিলে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন করলেও করোনা পরবর্তী সময়ে তাতেও ভাটা পড়ে। সব বাংলাদেশিই এখানে একটা নিজ দেশের কমিউনিটি অরগানাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা প্রচণ্ডভাবে অনুভব করে আসছিল। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার পালা শেষ হলো। স্টাভাঙ্গার ও তার আশপাশে বসবাসকারী সব বাংলাদেশিকে নিয়ে প্রথম অরগানাইজেশন বাংলাদেশ সোসাইটি অব রোগাল্যান্ড (বিএসআর) গঠিত হলো। স্টাভাঙ্গার ও তার আশে পাশের বৃহত্তর এলাকাকে নরওয়ের রোগাল্যান্ড কাউন্টি বলে।
গত ১৫ অক্টোবরের শরৎ উৎসবের মধ্য দিয়ে বিএসআর আনুষ্ঠানিক যাত্রা করল। স্বভাবতই তাই এ অনুষ্ঠান ঘিরে এখানের বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্জল্যের সৃষ্টি হয়।
স্টাভাঙ্গাররের মেয়র কারী নেসা নরটুন বিএসআরের সার্বিক সাফল্য কামনা করে এ অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ শুভেচ্ছা বাণী পাঠান। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর ভরপেট বাংলাদেশি খাওয়া। কী ছিল না সেই অনুষ্ঠানে—গান, কবিতা, পিয়ানো, বাঁশি, নাটিকা, শিশু নৃত্য, গেসিং গেম, রাফেল ড্র। আর খাওয়াও যেন ছিল বিয়েবাড়ির ভোজ। এখানেই শেষ না। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য ছিল বিশেষ উপহার বই আর স্টাভাঙ্গার মিউজিয়ামের এন্ট্রি টিকেট একদম ফ্রি। সবাই মিলে অনেক দিন পর দারুণ উপভোগ্য একটা সময় পার হলো।
সুন্দর প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানটির সার্বিক আয়োজনে আমিসহ ছিলেন গোলাম রাব্বানী, দিপংকর চৌধুরী, ঋতুপর্ণা পাল পায়েল।
*লেখক: নাসরীন বানু টিনা, নরওয়ের স্টাভাঙ্গারে তেল-গ্যাস কোম্পানিতে কর্মরত
**দূর পরবাসে লেখা পাঠাতে পারবেন আপনিও। ঠিকানা [email protected]