মন খারাপের গাড়ি
মন খারাপের গাড়িতে ছুটতে ছুটতে
হঠাৎ তোমার দেখা।
কী ব্যাপার! বড্ড চেনা চেনা মুখ
তোমার তো এ গাড়ি থাকার কথা না।
বড্ড আয়েশি বাড়ি আর বড় বাবু দেখেই তো
চাচা তোমাকে তুলে দিল।
কি এমন হলো যে তুমি আমার মতো এ গাড়িতে চেপে বসলে
নিশ্চুপ শান্ত পুকুরে হঠাৎ যেন মাছরাঙার ঠোকর!
তার পর জগৎ সমস্ত নীরবতা ভেঙ্গে
যেন জোয়ার নেমে এলো তার চোখে।
তার চোখ বহু বছর পড়া হয়নি আমার
যে চোখে চোখ রাখতে গিয়ে আমি বেমালুম ভুলে যেতাম জগতে সব, যে নেশায় নেশাগ্রস্ত মাতালের মতো মাতলামি করেছি কত।
তুমি বলতে ধুর ছাই। তুমি এতো বোকা আর পাগল কেন?
তুমি শঙ্কা আর ভয় দেখাতে। আর বলতে
কিছু একটা কর। কিছু একটা কর ।
আমি বলতাম তুমি পাশে থাকলে সবই হবে।
তারপর যে দিন চাকরিটা হলো
আমি পাগলের মতো ছুটে আসলাম তোমাদের বাড়িতে
চাচা আমাকে চিনেও না চেনার ভান করলেন।
আর চাচি তো সোজাই বলে বসলেন,
আমি যেন না আসি কখনো।
আমি মন সায় দেয় নি তোমাদের বাড়ি ছেড়ে আসতে
কিন্তু যখন তোমার ভাই তোমার হাতের একখানা চিঠি
আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বললো দিদি আপনাকে দিতে বললো।
বিশ্বাস করো, তখনো আমি বিশ্বাস করিনি। তুমি আমার পাশে নেই।
অথচ হঠাৎ করে এতো বছর পর ঠিক তো এলে …
কিন্তু আমি তো তোমাকে এভাবে চাইনি।
সম্পূর্ণ অপ্রস্তুতভাবে তোমাকে পাবো কখনো ভাবিনি।
কী ব্যাপার, আমি একাই কথা বলে যাচ্ছি
তুমি কি কিছু বলবে না?
অব্যক্ত অনেক কথা যেন হারিয়ে যেতে লাগল দূরের
জানালায় ধরা দেয়া গোধূলীর মতো।
নিঃশব্দেরও যে শব্দ আছে
আমি সেদিন বুঝলাম।
পরের স্টেশনে তোমার নেমে পড়ার কথা
কিন্তু তুমি নামলে না। অথচ আমিই ভুল করে নেমে পড়লাম
তোমার আশায়।
জগতে বহু ভুল মানুষ করে কেবল পাওয়া আশায়
অথচ সকল চাওয়া কি পাওয়া হয়?
অধরা অনেক কিছুই থাকে
যা কেবলই প্রশ্ন রেখে চলে চলার পথে।
আমাদের আবার কবে দেখা হবে?
*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]