এসএমআই লিখলেন ‘He must be discussed’
এসএমআই! জানি সবাই বুঝে নিয়েছেন কার সম্বন্ধে বলা হচ্ছে। জি, কথাটা সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে নিয়ে। এই অত্যন্ত গুণী মানুষ, ছাত্রদের প্রিয় শিক্ষক এসএমআইকে ব্যক্তিগতভাবে তেমন জানাশোনার সুযোগ হয়নি।
তবুও কয়েকবার নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে ই–মেইলে যোগাযোগ হয়েছে। আনিসুজ্জামান স্যার ও এসএমআই মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এসিয়ান স্টাডিজ সেন্টারের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত (১৫০তম) জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছিলেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী প্রমিতা মল্লিক।
সে অনুষ্ঠানস্থলেই এসএমআইএর সঙ্গে আলাপ। কথা হলো সামান্য। ‘অলস দিনের হাওয়া’ উল্লেখ করতেই মৃদু হাসলেন। মনে পড়ছিল প্রতি বৃহস্পতিবার ‘সংবাদ’ সাময়িকীর ওই কলাম পড়ার জন্য অফিসফেরত আমি ও আমার স্বামীর মধ্যে পত্রিকা নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি হতো।
আমি লিখছি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে। কষ্টটা কি জানেন? কেন কথাগুলো ওনাকে আগে বলতে পারলাম না, আফসোস, ভীষণ আফসোস।
দেশ থেকে রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত বর্ষ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত একটি বই ভাইয়া (আমার বড় ভাই) পাঠিয়েছিল। আরেকজন গুণী শিক্ষকের লেখা বই। রবীন্দ্রনাথ আমাদের মোহগ্রস্ত করে রেখেছেন অস্বীকার করি কীভাবে? মোহের বশেই বইটা পাঠিয়েছিল।
পড়া শেষ করেই বইটা নিয়ে ছোট একটি লেখা লিখলাম। অস্বস্তি ও ভয় কাজ করছিল। বইয়ের বিষয়টা ঠিকভাবে ধরতে পারলাম কি না ভেবে। তবে দেখাব কাকে? কার সময় আছে আমার মতো অতি সাধারণ একজনের লেখাটা পড়ে বলবে ঠিক আছে। কারণ, আমি যে কাজই করি জ্ঞান–বুদ্ধি, মেধা প্রয়োগ করি না, যা করি ভালোবেসে করি। ভালোবাসার কী মূল্য? আদৌ আছে কি কোনো মূল্য?
খুব দ্বিধা ও সংকোচ নিয়ে এসএমআইকে আলোচনাটা পড়ার জন্য পাঠালাম।
ভয় নিয়ে অপেক্ষা করছি। কী বলবেন?
তবে তাঁর একটি বিরল রাবীন্দ্রিক গুণ আমি প্রত্যক্ষ করেছি তা হলো উত্তর দিতে কখনোই ভুলে যেতেন না। রবীন্দ্রনাথ সবার চিঠির উত্তর দিতেন জানি। এসএমএইকে ই–মেইল পাঠিয়ে উত্তর পাইনি এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি।
দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]
তবে এবারের বিষয়টি জটিল। যাঁর বই নিয়ে লিখছি, তিনিও খুব একটা আলাপ–আলোচনাতে নেই। কী কারণে নেই, আমার জানা নেই। তবে তাঁর বই আমার ভালো লেগেছে, তাই লিখেছি। ওই যে বললাম, যা করি ভালোবাসা থেকে করি। হিসাব–নিকাশ করা হতভাগিনীর স্বভাবে নেই যে।
দুদিন পরই উত্তর পেলাম সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কাছ থেকে। খুব ইতিবাচক কথা! আমার আত্মবিশ্বাস কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল তাঁর সামান্য কটি বাক্য। তারপর যে দু–তিন পত্রিকাতে লেখাটা পাঠিয়েছি, তারা প্রকাশ করেছে।
যার ফলে আমি সাহস পেলাম রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র এমন কি জীবনানন্দ দাশকে নিয়েও লিখতে।
মনজুর ভাই, ক্ষমা চাই আজ! আপনি সাহস দিয়েছিলেন যে You have the ability to write…
আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি কখনো, আসলে সাহস হয়নি।
এভাবে চলে গেলেন!
ই–মেইলে আপনার শেষ বাক্যটি ছিল ওই লেখক সম্পর্কে, যা আমাকে অনেক ভাবিয়েছে, আজও ভাবাচ্ছে—
‘He must be discussed’