জেদ্দায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের জেদ্দায় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘মেড ইন বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’। ১৩ ডিসেম্বরে জেদ্দার র‍্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শীর্ষ কূটনীতিক, সৌদি আরবের ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এক্সপোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, জেদ্দার কনসাল জেনারেল মো. সাখাওয়াত হোসেন ও কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মেড ইন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মো. লিটন আহম্মেদ ও উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিরা। তাঁরা যৌথভাবে ফিতা কেটে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশ–সৌদি আরবের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পাঁচ দশক পেরিয়ে আজ নতুন মাত্রা লাভ করেছে। সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার ও রেমিট্যান্স উৎস দেশ। অন্যদিকে বাংলাদেশ সৌদি আরবের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক শুধু কূটনৈতিক নয়, এটি দুই দেশের মানুষের হৃদয়ের সম্পর্ক। মেড ইন বাংলাদেশ এক্সপো এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বলেন, সৌদি ভিশন ২০৩০–এর সঙ্গে বাংলাদেশের শিল্প, কৃষি, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ খাতের ঘনিষ্ঠ সংযোগ রয়েছে। এ ধরনের এক্সপো দুই দেশের ব্যবসায়িক সহযোগিতা বহুগুণে বাড়াবে।

দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই–মেইল: [email protected]

মো. লিটন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন ও রপ্তানি হাব। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করতে এই এক্সপোর গুরুত্ব অপরিসীম।

এই প্রদর্শনীতে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, খাদ্য ও হালাল পণ্য, শিশু পণ্য, চামড়া ও ফুটওয়্যার, প্লাস্টিক খেলনা, রিয়েল এস্টেট, জুট, হ্যান্ডিক্রাফটসহ বাংলাদেশি শিল্পের বিভিন্ন শাখা থেকে ৩০টির বেশি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া প্রদর্শনীতে সৌদি আরবের আমদানিকারক, পাইকারি ক্রেতা, খুচরা ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের ভিড় দেখা গেছে।

এক্সপোর মূল লক্ষ্য হলো দুই দেশের ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা, রপ্তানি পণ্য পরিচিত করা, যৌথ বিনিয়োগ (জেভি) সম্ভাবনা বর্ধিত করা, জিসিসি বাজারে নতুন ক্রেতা–সংশ্লিষ্টতা তৈরি করা ও এসএমই উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করা।

বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এই এক্সপো জিসিসি বাজারে বাংলাদেশি পণ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।

১৫ ডিসেম্বর শেষ হওয়া জেদ্দায় অনুষ্ঠিত এই মেড ইন বাংলাদেশ এক্সপো শুধু একটি বাণিজ্য প্রদর্শনী নয়, এটি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার একটি কৌশলগত উদ্যোগ। বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা ও সৌদির বাজার সম্প্রসারণের সুযোগকে একীভূত করে এই এক্সপো বাংলাদেশ–সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, এমনটাই মনে করছেন অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ী ও কূটনীতিকেরা।