আমার লেখালেখি নিয়ে কিছু করপোরেট ভাবনা

ফাইল ছবি

আমার কবিতায়, লেখায় শব্দের খোঁজ কিংবা বাক্যের গঠনতন্ত্র খোঁজার কোনো দরকার নেই। তবে আমার লেখার শব্দের আড়ালে যে ভাবার্থ থাকে, সম্মানিত পাঠককে তা অনুসন্ধান করে বের করতে হয় না। প্রযুক্তির বদৌলতে পাঠকদের মেজাজ, মর্জি, সূচি, রুচি এসবের দিকে আমি যথেষ্ট নজর রাখি। আমি বিশ্বাস করি মানুষের চিন্তাচেতনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়। সমাজ বিনির্মাণে নতুন নতুন ভাবনার অবশ্যই দরকার আছে।

সমকালীন কবিদের (সবাই কবি নন) সূচি এবং রুচির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমান কবি/লেখক এবং পাঠক উভয়ই এখন বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিশাসিত জীবনের অনুষঙ্গ। সংগত কারণেই আজকের পাঠক ও লেখক চিন্তাগত দিক থেকে যথেষ্ট অগ্রসরমাণ, তাঁদের চিন্তন প্রক্রিয়াও আলাদা। মুক্ত গদ্যে আজকাল অনেকেই তো কবিতা লিখছেন, এসব কবিতা মূলত কাহিনিনির্ভর। কবিতায় ইঙ্গিত এবং উপমা অনেক বড় একটি ব্যাপার, যা সরাসরি বলায় বিন্যাস তেমন ঘটে না। ইংরেজি কবিতায় বিজ্ঞানের অনেক বিষয়–আশয় সরাসরি ঢুকে পড়ে (এমন অনেক কবিতা আমারও আছে)।

যা–ই হোক, পাঠক কোনোকালেই খুব বেশি ছিল না। ফলে কবিতা বিনির্মাণে রূপ, রস, গন্ধ পরিবর্তন হওয়া এখন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। আমি যেভাবে ফিল করি, জীবনযাপন করি, সমাজের চারপাশকে আমি ঠিক যেভাবে দেখি, সেভাবেই লেখালেখির চেষ্টা করি। প্রত্যেক ব্যক্তির চিন্তা এবং যাপনপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আলাদা। ট্রাডিশনাল ধারায় আমি খুব কম কবিতাই লিখেছি, আমার সামান্য যেটুকু বোধবুদ্ধি আছে, লেখালেখিতে আমি তাই ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। আমার নিয়মিত কাজের প্রফেশনাল ধারাটি যেহেতু ল্যাবরেটরিভিত্তিক গবেষণা, ফলে প্রফেশনাল কাজটিকেই আমি গুরুত্ব দিয়েছি সবার আগে। তারপরে লেখালেখি, লেখালেখির ব্যাপারটি মূলত আমার একধরনের ভালো লাগা থেকেই শুরু। অনেকেই বলে থাকেন আমার লেখায় প্রেমনির্ভরতা বেশি, আমিও তাই বলি তবে প্রত্যেক কবিকেই জীবনের ধাপে ধাপে রচনা করতে হবে ব্যাপারটা এমনও নয়, এটি কারও পক্ষে সম্ভবও নয়।

জীবনের অসংখ্য ধাপ বা পর্যায় আছে, তাই আমার মুড অব এক্সপ্রেশন যা বলে আমি তাই লিখি, আমার চিন্তার প্রক্রিয়াগুলোই আমার লেখা, যন্ত্রণার রিলিজ হচ্ছে আমার এক একটি কবিতা। আমার কবিতায় উৎসব যেমন আছে, সেলিব্রেশনও তেমনি আছে। আমার লেখা কবিতায় একধরনের দেখা এবং অদেখার একটা কাল্পনিক অভিজ্ঞতার সংশ্লেষ আছে। ক্ল্যাসিক্যাল সাপোর্ট না পেলে আমি লিখতে পারি না; তবে ন্যারেটিভ কবিতার কিছু দুর্বলতা যে আমার লেখায় নেই, আমি তা বলছি না। আমার কবিতা পড়লে যেকোনো পাঠকের মুড অব এক্সপ্রেশন অর্থাৎ কবিতা তাঁকে অস্থির করবেই। পরিশেষে বলি, পুরস্কার অনেক আনন্দের একটি বিষয় সেই আনন্দদায়ক পুরস্কার আমার জীবনে আমি অনেক পেয়েছি (বেশির ভাগই বিদেশি অ্যাওয়ার্ড) তবে দেশি পুরস্কারের যে ধারা, রীতিনীতি, তা মোটেও সুস্থ নয়, আমার করপোরেট অনেক অভিজ্ঞতা থেকেই আমি এ কথাটি বললাম।