ভিকারুননিসা অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার পুনর্মিলনী এবং চ্যারিটি অনুষ্ঠান

২০ নভেম্বর ভিকারুননিসা অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার (ভিএ অস) পুনর্মিলনী এবং চ্যারিটি প্রোগ্রাম ২০২২ সিডনির একটি মিলনায়তনে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়।

কার্যকরী পরিষদের সদস্য, সাধারণ সদস্য ও তাঁদের পরিবার এবং শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে ৬২০ জনের উপস্থিতিতে মুখর ছিল এ প্রাণের মেলা। যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত ভিকারুননিসা স্কুল এবং কলেজের ছিলেন ২৮৪ জন। ক্যানবেরা, মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, অ্যাডিলেড, পার্থসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে উড়ে এসে যোগ দেন ভিকি অ্যালামনাইরা। অনুষ্ঠানে প্রথম পর্ব সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন রিজওয়ানা আলী দোলা।

স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহবুবা খানম মুক্তা, বার্ষিক কার্যবিবরণী তুলে ধরেন জেনারাল সেক্রেটারি সুরঞ্জনা জেনিফার রহমান। অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ট্রেজারার তাসরিনা নাহিদ তন্বী। প্রেসিডেন্ট মাহবুবা খানম মুক্তা তাঁর কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের উপস্থিত সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

ভিকারুননিসা অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরা তাঁদের নিয়মিত কার্যক্রমের বাইরে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে চ্যারিটির উদ্যোগ নিয়েছেন। গত তিন বছরে প্রায় ২১ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার সহায়তা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার নারীদের জন্য একটি তহবিল গঠনের লক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানে বিক্রীত টিকিট এবং বিভিন্ন স্পনসরের মাধ্যমে প্রাপ্ত অনুদান থেকে ছয় হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারের চেক ভিএ অস–এর পক্ষ থেকে কালচারাল ডাইভারসিটি নেটওয়ার্ক ইনকরপোরেটেডের প্রেসিডেন্ট কাম্বারল্যান্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলর সাবরিন ফারুকীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর কেক কাটার মাধ্যমে শেষ হয় প্রথম পর্ব।

দ্বিতীয় পর্বে সম্পাদক সাকিনা আক্তার উদ্বোধন করেন পুনর্মিলনী নিয়ে প্রকাশিত ম্যাগাজিন ‘নূন সমীরণ’। ধন্যবাদ জানানো হয় অনিন্দিতা আহমেদ ও শাখাওয়াত নয়নকে। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত শিক্ষক ও ছাত্রীদের গল্প, কবিতা আর অজস্র স্মৃতিকথায় ম্যাগাজিনটি হয়ে উঠেছে অনন্য স্মারক।

দুপুরের খাবারের বিরতির পর চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সংগঠনের সদস্যরা। স্কুলের দিনগুলোর মতো ড্রাম বাজিয়ে ছন্দের তালে তালে শুরু হয় স্মৃতির রোমন্থন আনন্দঘন মুহূর্তে। সঞ্চালক নূর এ নাজিয়া বিপা, আনূষা রহমান নীল সাদা কলেজ ড্রেস পরে মঞ্চে ওঠেন এবং শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তিন ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছিল অ্যালামনাইদের পরিবেশনা দিয়ে। দলীয় নৃত্য, আবৃত্তি, সংগীত, টক শো, ভিউয়ার শো, পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবিতে মোহমুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শকেরা। পরিবেশনায় ছিলেন সুলতানা লুবনা আলম, নাফিসা আসিফ স্বাগতা, রোকেয়া ফকির কেয়া, গাজী আশা হিমেল, গাজী তাসনুভা হিমেল, রুমানা হায়দার, প্রাঞ্জনা বর্ণিকা কর্মকার, লুবাবা ইসলাম, রাজবিন শওকত, সিদরাতুল মুনতাহা নিকিতা, প্রিয়াংকা বিশ্বাস, তামিমা শাহরীন, দেবযানী রায় চৌধুরী, নাজিয়া আফরিন হক জয়া, রুবাইয়া নুর নাবিলা, ইসরাত জাহান, রুবিনা হক, আফিয়া তাবাসসুম, ফারহানা জাহান, ফরহানা হাসান অভি, নওরিন রহমান, সাদিয়া হক তন্দ্রা, তাসনিয়া, সেতু গুপ্তা, তমালিকা তামান্না জয়া, নভেরা নুসরাত খান ইলোরা, নাদিয়া আনোয়ার, সোহেলা সিলভী, রেফায়েত রওনক ইকো, কানিজ আহমেদ ও সুরঞ্জনা জেনিফার রহমান।

যন্ত্রশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন সোহেল খান (গিটার), সুবীর গুহ (তবলা), নীলাদ্রি চক্রবর্তী (কি–বোর্ড)। কারিগরি সহায়তা ও সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মিতুল হক, তানিম আল মিনারুল মান্নান এবং কানিজ আয়েশা জ্যোতি। সমাপনী পর্বে ‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়’ সমবেত কণ্ঠে গানটি এক হৃদয়গ্রাহী পরিবেশের জন্ম দেয়। উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।