আনন্দধারা আর্টসের আয়োজনে লন্ডন হয়ে গেল শিশু উৎসব
‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী ঘোর কুটিল পন্থ তার লোভ জটিল বন্ধ।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ লাইনগুলোই আমাদের মনের মধ্যে গুমরে মরছে এ অশান্ত পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে। ফিলিস্তিন, ইউক্রেন, আফ্রিকাসহ পৃথিবীর নানা প্রান্তে যুদ্ধ, আগ্রাসন সবচেয়ে করুন শিকার আমাদের শিশুরা। কান পাতলেই শিশুদের এ আর্তনাদ আমাদের সবার মনকে আর্দ্র করে দিচ্ছে। এ বিরুদ্ধ সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা স্বপ্ন দেখি এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে কাজ করতে চাই, যাতে পৃথিবীর সব শিশু সুস্থ মানবিক পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে। বড় হয়ে তারা সবাই যেন পৃথিবীর কল্যাণ কাজে যুক্ত হয়ে আমাদের এ সবুজ গ্রহটাকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে। আনন্দধারা আর্টস ছোট পরিসরে হলেও সেই চেষ্টায় রত দীর্ঘদিন ধরে। এ ধারাবাহিকতায় গত রোববার (১৯ নভেম্বর) লন্ডনের রিচমিক্স মিলনায়তনে আনন্দধারা আর্টসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো লন্ডন শিশু উৎসব ২০২৩। শিশুদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা সবার মন কেড়েছে।
অনুষ্ঠান শুরুতে শিশুরা ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর’—এ রবীন্দ্রসংগীত বাংলা ও ইংরেজিতে পরিবেশন করে। এরপর কলাকার আর্টসের ছোটরা পরিবেশন করে গীতিনাট্য ‘দ্য সেলফিশ জায়েন্ট’ যা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। এতে পর আনন্দধারা আর্টসের শিশুশিল্পীরা পরিবেশন করে রবীন্দ্রনাথের গীতিনৃত্যনাট্য ‘কালমৃগয়া’। অসাধারণ নৈপুণ্যে শিশুরা একই সঙ্গে গান, নাচ ও অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। এরপর ইন্দ্রাণী দত্ত ড্যান্স গ্রুপ পরিবেশন করে ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে নৃত্যগীতি ‘কালারস অব কলকাতা’। ছোট-বড় সবার গবেষণালব্ধ মিলিত এ পরিবেশনা দারুণ সাড়া ফেলেছে। এরপর একক গান ও আবৃত্তি পরিবেশনার পর সমবেত সংগীত ‘উই শ্যাল ওভারকাম’-এর মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি হয়।
এ উৎসব শেষে আনন্দধারা আর্টসের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে শিশুর মনোজগৎকে মানবিক করে তোলা আমাদের প্রধান প্রচেষ্টা। তিন বছর ধরে বিশ্ব শিশু দিবসের আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা আনন্দধারা আর্টসের বাইরেও অন্য শিশুসংগঠনগুলোকে এ উদ্যাপনের অংশ করে নিতে চাইছি। ইতিমধ্যেই অনেকেই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আমরা তাঁদের সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা মনে করি, বড় কল্যাণকর কাজে যুক্ত হতে সবার যুক্ততা, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’