মিশিগানে কালীপূজা ও অন্নকূটপূজা অনুষ্ঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরের মন্দিরগুলোতে গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে কালীপূজা উদ্যাপন করা হয়েছে। জানা গেছে, ডেট্রয়েট দুর্গামন্দিরে সন্ধ্যায় পূজা অনুষ্ঠিত হয়, রাত ৮টায় অঞ্জলি, আলোকসজ্জা, ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করা হয়, সবশেষে ছিল প্রসাদ বিতরণ। ওয়ারেন সিটির শিবমন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে। ভক্তিমূলক গান পরিবেশিত হয় ৭টায়, অঞ্জলি রাত ৮টা ৩০ মিনিটে এবং সবশেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ওয়ারেন সিটির কালীমন্দিরে গত বৃহস্পতিবার পূজা, অঞ্জলি, ভক্তিমূলক গান, দীপাবলির প্রদীপ প্রজ্বালন, আলোকসজ্জা, আরতি, ধুনুচি নৃত্য ও সবশেষে ছিল প্রসাদ বিতরণ। এ ছাড়া গতকাল শনিবার আবার পূজা উদ্যাপন করা হয়।
এদিকে ডেট্রয়েট দুর্গামন্দিরে গতকাল শনিবার অন্নকূটপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজা শুরু হয়েছে বেলা ১১টায়, ভোগ দুপুর ১২টায়। বিপুলসংখ্যক ভক্তরা এই পূজায় অংশগ্রহণ করেন। শতাধিক পদের তরকারি, ভাজা, বড়া, দই, মিষ্টি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের ভোগ দেওয়া হয়। পরে ভক্তদের মধ্যে এ প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
মন্দিরের প্রেসিডেন্ট পংকজ দাশ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নিপেশ সূত্রধর জানান, এবারের পূজায় প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়েছে। অন্নকূটপূজার ব্যাপারে মন্দিরের মিডিয়া ও পাবলিকেশন ডাইরেক্টর পার্থ দেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গোবর্ধনপূজা অন্নকূট নামে পরিচিত। সনাতন ক্যালেন্ডার অনুসারে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে গোবর্ধনপূজা করা হয়। অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই উৎসব উদ্যাপিত হয়। ভক্তরা গোবর্ধনগিরির উপাসনা করেন এবং কৃতজ্ঞতার চিহ্ন হিসেবে কৃষ্ণকে বিভিন্ন ধরনের নিরামিষ খাবার প্রস্তুত করেন এবং অর্পণ করেন। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, বৃষ্টি যেন ভালো হয়, সে জন্য বৃন্দাবনের লোকেরা জাঁকজমক করে ইন্দ্রের পূজা করতেন। তা পছন্দ হয়নি কৃষ্ণের, তিনি উপদেশ দেন, ইন্দ্রের পূজায় যে খাবার ইত্যাদি দেওয়া হয়, তা শিশুদের দিয়ে দেওয়া হোক। শ্রীকৃষ্ণের কথা ফেলতে পারেননি বাসিন্দারা। তাতে ক্ষুব্ধ হন দেবরাজ ইন্দ্র। শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি, ইন্দ্রের ক্রোধের কারণেই। তখন গ্রামবাসীকে বাঁচানোর জন্য নিজের লীলা দেখান কৃষ্ণ। সেই সময় গ্রামবাসীরা যে খাবার নিয়ে গিয়েছিল তা-ই খাওয়া হয় ভাগাভাগি করে, যা খুব ভালো লাগে শ্রীকৃষ্ণের। তার পর থেকেই শুরু হয় ‘অন্নকূট’ পূজা। অন্ন, মানে ভাত। কূটের অর্থ, পাহাড়। বিপদের সময়, ওই বৃষ্টিকালীন অবস্থায় গ্রামবাসী ও কৃষ্ণ যে খাবার ভাগ করে খান, তার আকার ছিল পাহাড়ের মতো! সেই থেকেই নাম এই ‘অন্নকূট’।