ভিয়েনায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

সকালে দূতালয় ও বাংলাদেশ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয় এবং পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সন্ধ্যা ছয়টায় দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা পরম শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদদের স্মরণ করেন। তাঁদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক ও ঐতিহাসিক অবদান তুলে ধরেন। বক্তারা পঁচাত্তরের বর্বরোচিত ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং বিদেশে পলাতক খুনিদের দেশে ফেরত এনে শাস্তি কার্যকর করার জোর দাবি জানান। বক্তারা জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশমাতৃকার উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সম্পৃক্ত হতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন জাতীয় সংসদের মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য, অনুমিত হিসাব–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুস শহীদ। তিনি জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কর্মময় সংগ্রামী জীবন, রাজনৈতিক দূরদর্শিতার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বস্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হন। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রাহাত বিন জামান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সব শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর অসামান্য নেত্বত্বের বর্ণনা দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই নিরস্ত্র বাঙালি শক্তিশালী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়নবিষয়ক দর্শনকে হৃদয়ে ধারণ করেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে নিবেদিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

সবশেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সব শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশ ও জাতির শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়নের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে। বিজ্ঞপ্তি