নানা অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্ল্যাকআউট!
যুক্তরাষ্ট্রে আগামীকাল রোববার থেকে টিকটক ব্ল্যাকআউট হচ্ছে। এককথায় টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হতে চলেছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্মে জেন-জি প্রজন্মের মধ্যে হইচই শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
টিকটক ২০১৬ সালে ভিডিও এবং সামাজিক নেটওয়ার্ক হিসেবে চালু হয়ে আজ পৃথিবীর দ্রুততম অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। টিকটক, যা চীনে দৌয়েন নামে পরিচিত। টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইয়েমিং। পিউ রিসার্চ দেখিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ব্যবহারকারী রয়েছে ১৭০ মিলিয়ন। ১৮ থেকে ২৯ বছরের তরুণ-তরুণীরা এর প্রতি আসক্ত। শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই প্রতিবছর টিকটক শপে লক্ষাধিক তরুণ ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে থাকেন। জনপ্রিয়তার দিক থেকে আমেরিকার পরে রয়েছে ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়া। টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ার খবরে তাঁরা (ব্যবহারকারী) নিজেদের ‘টিকটক রিফিউজি’ বলে সামাজিক প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে বলছেন, ‘রোববার থেকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও এবং সামাজিক নেটওয়ার্ক টিকটক আমেরিকাতে বন্ধ হতে যাচ্ছে শুনে আমরা আশাহত।’
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটক প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘টিকটকের জন্য আমার হৃদয়ে একটি উষ্ণ স্থান রয়েছে।’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তিনি বারবার বলেছিলেন, টিকটকে তাঁর ১৪ মিলিয়নের বেশি অনুসারী রয়েছেন। সে সময় জেনারেশন জেডের প্রিয় অ্যাপে তাঁর সাফল্য দেখে খোদ তাঁর প্রচার দলও অবাক হয়েছিল।
আইনত প্রশ্নবিদ্ধ চীনের মালিকানাধীন অ্যাপটি আগামীকাল থেকে নিষিদ্ধ হতে চলেছে। গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরিত একটি আইনে বেইজিংভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্ট বাইটড্যান্সকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে অ্যাপটি বিক্রি করতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানটি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে বলে জানানো হয়েছিল। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক অ্যাপটি সংরক্ষণ করার জন্য কোম্পানির শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ডিসেম্বরে টিকটকের প্রধান শৌ জি চেও সিঙ্গাপুর থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার পামবিচের মার-এ–লাগোর ক্লাবে উড়ে যান।
চীনের টিকটক অ্যাপ নিয়ে নানামুখী বিতর্কের মধ্যে অনেকে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে এটিকে অভিহিত করেছেন। এ ছাড়া চীনের ‘ডিজিটাল ফেন্টানাইল’ অ্যাপ হিসেবে টিকটক রিপাবলিকান আমেরিকান কিশোর-কিশোরীদের মগজ ধোলাই করছে বলে গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। চীনা সরকার গোপনে আমেরিকানদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে এই অ্যাপ ব্যবহার করে বলে উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। টিকটক বন্ধের খবরে চীন বসে নেই, ইতিমধ্যে আমেরিকার সামাজিক প্ল্যাটফর্মে চীন ‘সিসংসু’ নামে আরেকটি নতুন অ্যাপ ছেড়েছে। উঠতি তরুণ-তরুণীদের এই সামাজিক অ্যাপে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এটি ডাউনলোড করতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করেন।