অনুসরণ বনাম অনুকরণ
আসুন আগে একটু বুঝি অনুসরণ আর অনুকরণ আসলে কী?
যেহেতু আমরা বাংলা কম বুঝি...
খুব ছোট্ট করে বললে...
অনুসরণ (Follow)
অনুকরণ (Copy)
অনুসরণ, পছন্দের কাউকে অনুসরণ করতেই পারেন...
মোটেও দোষের কিছু না, ভালো বরং...
পছন্দের ব্যক্তিত্ব, সেটা যে কেউ হতে পারে...
ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব/রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব/সেলিব্রিটি/লেখক/কবি/গায়ক/গায়িকা/নায়ক/নায়িকা/সামাজিক ব্যক্তিত্ব/পারিবারিক ব্যক্তিত্ব/সহকর্মী/পছন্দের বন্ধু-বান্ধবী, যে কেউ...
জগতের সবাই সৃষ্টিশীল হয় না,
তাই অনুসরণ করা মন্দ কিছু না।
কাউকে অনুসরণ করলে হয়তো কিছু শিখবেন, জানবেন...
কিন্তু অনুকরণ! কিছুতেই না..., একদমই না...
যখনই কাউকে অনুকরণ করতে যাবেন, হাসির পাত্র হবেন। এমনই হাসির (পাত্র/পাত্রী) হবেন যে এই জীবনের মতো গায়ে তকমা লেগে যাবে, হাজার চেষ্টা করলেও যাবে না, সবাই সব বুঝবে, মিটিমিটি হাসবে...কিন্তু আপনি কিছুই জানবেন না।
আর অপছন্দের কাউকে...!
অনুকরণ বা অনুসরণ কোনোটাই করতে যাবেন না প্লিজ...
তাদের দেখে হিংসা লাগলে জ্বলেপুড়ে মরে যান...
কোনো সমস্যা নেই,
তবু অনুকরণ করতে যাবেন না।
স্রেফ ধরা পড়ে যাবেন, তখন আম–ছালা সবই যাবে...
প্রত্যেক মানুষ ভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।
কেউ কারও মতো হতে পারে না...
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে কিন্তু নজরুল হননি, অন্য কিছু হয়েছেন; যদিও খুবই কাছ থেকে তিনি তাঁর বাবাকে দেখেছেন..., বিল গেটসের ছেলেও বিল গেটস হননি, নায়করাজ রাজ্জাকের ছেলে রাজ্জাক হননি। নিজ নিজ পরিবারের সদস্যরা যখন হতে পারেননি, তখন আপনি শুধুই অনুকরণ করে ফাঁপা কলসি ছাড়া আর কি কিছু হতে পারবেন?
কেউ ভালো লেখে, কেউ ভালো গায়, কেউ ভালো আঁকে, কেউ ভালো বলে, কেউ ভালো চলে, কেউ ভালো ছবি তোলে, কেউ ভালো রাঁধে, কেউ ভালো দেখতে, কেউ ভালো দেখাতে...
থাকুক তারা তাদের মতো,
আপনি থাকুন আপনার মতো।
দোহাই লাগে অন্যকে নকল কইরেন না...
এর চেয়ে নিজের স্বকীয়তায় থাকেন, জবাকুসুম তেল মাথায় দিয়ে শীতলপাটি বিছিয়ে ঘুমান।
কারণ, প্রতিটি পাখির গলার স্বর আলাদা...
ইগল ইগলের মতোই ডাকে, ময়না ময়নার মতো, ঘুঘু ঘুঘুর মতো, কোকিল কোকিলের মতো, কাক কাকের মতো...
সুতরাং অনুকরণ করতে যেয়ে যখন মুখ খুলবেন, তখন কিন্তু আপনি আসলে যেই পাখি, ঠিক সেই পাখির স্বরই শুনতে পাওয়া যাবে, অন্য পাখির নয়।
সকাল সকাল এত কড়া সংলাপের জন্য লজ্জিত। তবে ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি, শুভকাজ শুভদিনেই ভালো।
হায় আল্লাহ, তাই...