জাপানে হলো ভিন্ন অভিজ্ঞতা

আজকে (৮–৫–২০২৪) নতুন এক অভিজ্ঞতা হলো। সকাল আটটার সময় বাবুকে স্কুলে দিয়ে বাসায় আসতেছি, হঠাৎ দেখি বাসার সামনে রাস্তার ওপর সুন্দর একটা মানিব্যাগ পড়ে আছে। কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলাম। দেখলাম, কেউ নেই। মানিব্যাগটা হাতে নিলাম। তারপর ব্যাগ খুলে দেখি, অনেকগুলো ক্রেডিট কার্ড। চিন্তায় পড়ে গেলাম। যে জায়গায় মানিব্যাগটা পড়ে ছিল, সেটি মুঠোফোন দিয়ে ভিডিও করলাম।

তখন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এলাকার পুলিশ অফিসে চলে গেলাম। একটু ভয় লাগছিল, ঝামেলায় পড়তে হয় কি না। পুলিশ অফিসে ভেতরে গিয়ে সবকিছু বললাম। পুলিশ ব্যাগ খুলে সবকিছু চেক করে দেখে।

তারপর আমার ঠিকানা আর ফোন নম্বর নিয়ে নিল। এসব নেওয়ার পর আমাকে বলে, আমি কোনো টাকা চাই কি না। যেহেতু ব্যাগে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে, আমি টাকা চাইতে পারি—এ ভাবনা থেকেই হয়তো বলেছে। আমি বলছি, না, আমার টাকা লাগবে না। তখন পুলিশ বলে, যে লোকের মানিব্যাগ, সে যদি খুশি হয়ে তোমাকে টাকা দিতে চায়, তাহলে তুমি কি টাকা নেবে? তখন আমি বললাম, না। পুলিশকে আমি বলছিলাম, আপনি যাঁর মানিব্যাগ তাঁকে পৌঁছে দিলে আমি খুশি হব। আমার টাকা লাগবে না। তখন পুলিশ বলেছে, যদি তোমার ঠিকানা আর ফোন নম্বর চায়, তাহলে কি দেব? আবারও আমি বলেছি, না, যার ব্যাগ উনি ফিরে পেলেই খুশি হব।

পুলিশ আমাকে বলেছে, আমি কি ট্যাক্সি বা বাসে করে পুলিশ অফিসে গিয়েছি। আমি জানতে চাইলাম কেন? পুলিশ বলে, আসা-যাওয়ার ভাড়া দিয়ে দেওয়ার নিয়ম আছে। তখন আমি বলেছি, লাগবে না।

আমি সাইকেল চালিয়ে এসেছি। তারপর পুলিশ বলছে, আমার যে সময়টা নষ্ট হয়েছে এবং আমার কি সময় (কাজের ক্ষতি হয়েছে কি না) ছিল। যে সময় আমার নষ্ট হয়েছে, সে জন্য আমাকে টাকা দিতে চায় তারা। আমি বলেছি, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ; আমার টাকা লাগবে না। তখন পুলিশ আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি কোন দেশের? বললাম, বাংলাদেশ। পুলিশ আমাকে মাথা নিচু করে ধন্যবাদ দিয়ে বলেছে, ভালো থেক। আমিও মাথা নিচু করে ধন্যবাদ দিয়ে ফিরে এলাম।

*লেখক: সালমা আক্তার, টোকিও কাতসুশিকা-কু, জাপান
     

*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]