অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আনিসুল হককে সংবর্ধনা
অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের সম্মানে পরিচিতি ও সংবর্ধনা (মিট অ্যান্ড গ্রিট) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ৫ মার্চ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ক্যানবেরার অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্রফোর্ড স্কুল অব পাবলিক পলিসি।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে ক্রফোর্ড স্কুল অব পাবলিক পলিসির অধ্যাপক কুন্তলা-লাহিড়ী দত্ত বাঙালি ও বাংলা ভাষার ঐতিহ্য ও ঐশ্বর্য তুলে ধরেন। তিনি ভাষা ও দেশের জন্য বাংলাদেশের মানুষের অপরিসীম ত্যাগকে স্মরণ করেন এবং শ্রদ্ধা জানান।
কুন্তলা-লাহিড়ী দত্ত বলেন, আনিসুল হকের লেখায় সাহিত্যরস, উপস্থাপনা ও গভীরতা তাঁর লেখাকে সমৃদ্ধ করেছে। আনিসুল হকের ‘মা’ উপন্যাস একটি অনবদ্য সৃষ্টি। এ সময় বাংলাভাষী মানুষের মন ও মননের খোরাক—বাংলা সাহিত্যকে যাঁরা সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে এজাজ মামুন তাঁর বক্তব্যে বলেন, আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের একজন প্রতিবাদী যুবক প্রেম ও দ্রোহের কবিতা দিয়ে যে কবিজীবনের সূচনা করেছিলেন, তা আজ এক পরিপূর্ণ সাহিত্যিক জীবনে রূপান্তরিত হয়েছে। আনিসুল হক এখন বরেণ্য লেখক হিসেবে গড়ে উঠেছেন। ইতিহাস, সমাজ ও বাংলাদেশের প্রতি দায়বদ্ধতা তাঁর লেখাকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে, তেমনই তিনি পাঠকের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন। তাঁর কবিতা, উপন্যাস, কলাম আজ পাঠককে ঋদ্ধ করে।
আনিসুল হক তাঁর বক্তব্যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে রাজনৈতিক বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত কীভাবে প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে কীভাবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বাঙালি নিজেদের জীবনে প্রবাহিত করেছে, তার ওপর আলোকপাত করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের কৃতী লেখকদের সৃষ্ট সাহিত্য ও লেখা পড়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। নিজে কীভাবে লেখেন এবং কেন লেখেন, তা-ও তুলে ধরেন আনিসুল হক।
পরিচিতি ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আনিসুল হকের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা এবং বাংলা সাহিত্য ও ভাষা নিয়ে আলোচনা, প্রশ্ন ও মতামত দেন মাঈনুল হক, আসিফ রহিম, কামাল উদ্দিন, এনামুল হক ভূইয়া, তপন কুণ্ডু, নাহিদ ভূইয়া, তুষার রায়, জিয়াউদ্দিন বাবলু, স্বপ্না শাহনাজ, অমিয়া মতিন, আবু সাঈদ, নিউটন মহুরী, নাদিম মণ্ডল, আবু সায়েম চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্রফোর্ড স্কুল অব পাবলিক পলিসির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন শিক্ষার্থী মাশরুফাহ খাতুন। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আতিক টোকন ও বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
অনুষ্ঠান শেষে সবাই দাঁড়িয়ে ও হাততালি দিয়ে আনিসুল হকের প্রতি সম্মান জানান এবং কেক কেটে তাঁর জন্মদিন উদ্যাপন করেন।