কানসাস থেকে ভার্জিনিয়া হিমশীতল বৃষ্টি-হাড় কাঁপানো শীত
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস থেকে ভার্জিনিয়া পর্যন্ত ১ হাজার ২৩৫ মাইল জুড়ে ১০ অঙ্গরাজ টানা ২৪ ঘণ্টা ভারী তুষারঝড় ও হিমশীতল বৃষ্টি-হাড় কাঁপানো ঠান্ডা বয়ে গেছে। এই বৈরী আবহাওয়ায় ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
গত শনিবার মধ্যরাত থেকে তাপমাত্রা নিচে নামতে শুরু করে, রোববার সকাল ছিল ফকফকা সাদা। জানালায় উঁকি দিয়ে দেখি গ্যারেজের বাইরে রাখা গাড়িগুলোর ওপর প্রায় তিন ইঞ্চি তুষার জমে শক্ত হয়ে আছে। ভাগ্যিস গেরদিন আইস ডিফ্রস্টার এনে রেখেছিলাম। যদিও রোববার অনেকের বাইরে কাজ থাকে না; কিন্তু আমাকে যেতে হয় কাজে। ক্যানসাসের উচিটা শহরের অনেকে তখনো ঘুম থেকে ওঠেনি। দেখতে পেলাম, মূল সড়কগুলোয় দ্রুতগতিতে লবণ ছিটিয়ে গাড়ি ছুটছে। লবণ ছিটালে গাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়বে না। এ কাজে লাখ লাখ টন লবণ লাগে। ২০ মাইল গতিতে গাড়ি চালিয়ে পৌঁছালাম কর্মস্থলে। সারা দিন প্রচণ্ড তুষারঝড় ও হাড় কাঁপানো কনকনে শীত।
রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় ক্যানসাস রাজ্যের সবার কাছে ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট এল—সোমবার পর্যন্ত জরুরি কাজ ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বের না হয়। হাইওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোর শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। কাজ থেকে রাস্তায় বের হতে চোখে পড়ল—মূল সড়কে তুষারের স্তূপ, পাশের রাস্তাগুলোয় অনেকে স্নো-বলিংয়ে ব্যস্ত, অনেককে স্লেডিং করতে দেখা যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর চোখে পড়ল, তীব্র শীতের মধ্যেও রাস্তায় আটকে যাওয়া বেশ কয়েকটি গাড়ির যাত্রীকে অন্য গাড়ির যাত্রীরা সহায়তা করছেন। এই মানবতা দেখে গাড়ির পেছন থেকে আমার মেয়ে বলে উঠল, ‘হিউম্যানিটি ইজ নট ডেড’, মানবতা এখনো মরেনি। রাস্তার পাশে গাছের ডালগুলোতে বৃষ্টির ফোঁটা জমে (ক্রিস্টাল আইস) ঝুম ঝুম মিষ্টি শব্দ অন্য রকম আবহ সৃষ্টি করেছিল।
এটি সত্য, যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়ার অগ্রিম তিন দিনের রিপোর্ট হুবহু মিলে যায়। ফলে শুক্রবার থেকে ক্যানসাসে অধিকাংশ মানুষ আগাম প্রস্তুতি নিতে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এখন চলছে উইন্টার ব্রেক। স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা বাসায়। অনেকের ভ্রমণে বের হওয়া আপাতত বন্ধ।