জার্মানির হ্যানোভারে বৈচিত্র্যময় উৎসব

হ্যানোভার শহরের মেয়র বেনিট ওনাইয়ের সঙ্গে উৎসবের শিল্পী ও উদ্যোক্তারাছবি: লেখক

আমন্ত্রণপত্রটি ছিল বর্ণিল। ঠিক আমন্ত্রণপত্রের মতো উৎসবটি হয়ে উঠেছিল ছন্দময় আর বর্ণিল। উত্তর জার্মানির ঐতিহাসিক হ্যানোভার শহরে বসবাস করে ১৭৮ দেশের নানা জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ। উৎসবটি উদ্বোধন করে হ্যানোভার শহরের মেয়র বেনিট ওনাই বললেন, এ ধরনের বহু সাংস্কৃতির মানুষ ও জাতিগোষ্ঠীর এই উৎসব আমাদের সমাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। সম্প্রতিক কালে জার্মানিজুড়ে অভিবাসী–বিদ্বেষের বিরুদ্ধে এই আয়োজন একধরনের প্রতিবাদ ও সংহতি বলে জানান মেয়র বেনিট ওনাই।

‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]
বৈচিত্র্যময় উৎসবটির বর্ণিল আমন্ত্রণপত্র
ছবি: লেখক

হ্যানোভার শহরে ৩৫ বছরের পুরোনো আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের এটি ছিল ১০ উৎসব। জার্মান ভাষায় ‘ফেস্ট ডের ফিলফাল্ট’ বা বৈচিত্র্যময় উৎসবে উপস্থিত হয়েছিল শহরের ৬০টি নানা ধরনের সংগঠন। নানা জাতি–সংস্কৃতির সংগঠনগুলো উৎসবে যোগদান করে তাদের স্বকীয় সাংস্কৃতি তুলে ধরে।

গতকাল রোববার (১৪ সেপ্টম্বর) স্থানীয় ফাউস্ট চত্বরে বিভিন্ন দেশের কয়েক শ মানুষ এই বৈচিত্র্যময় গ্রীষ্ম উৎসবে যোগ দেন। এই উৎসব মঞ্চে এসেছে বাংলাদেশের লোকসংগীত, ছিল ভারতীয় ধ্রুপদি, লাতিন আমেরিকার সাম্বা নাচ ও গান, পোল্যান্ড ও রুমানিয়ার সংগীতগোষ্ঠীর সমাবেত গান। অনুষ্ঠানে আরও ছিল আফগানিস্তান, তুরস্ক, ইরান, ইরাক, আইভরি কোস্ট, মালি, ঘানা,  সুদান, সোমালিয়া, উগান্ডাসহ বেশ কিছু দেশের লোকসংগীত।

অনুষ্ঠানে ভারতীয় ধ্রুপদি নৃত্য
ছবি: লেখক

জার্মানির লোয়ার সাক্সেনি রাজ্যের রাজধানী হ্যানোভার শহরে ১৯৮৯ সালে বেশ কিছু অভিবাসী ও জার্মানদের প্রচেষ্টাই আন্তসাংস্কৃতিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে হ্যানোভার আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির গোড়াপত্তন করেন। গত ৩৫ বছর ধরে হ্যানোভার শহরে বসবাসরত অভিবাসীদের সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে যেতে এবং অভিবাসী ও শরণার্থীদের নানা আইনগত অধিকার, সমাজসচেতন ও স্বাবলম্বী করতে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।

মঞ্চে তুরস্কের লোকসংগীত
ছবি: লেখক

বিগত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিধি আরও বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিবছর আন্তসংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় উৎসব ছাড়াও  জার্মানিতে আন্তসাংস্কৃতিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে যুব, বয়স্ক অভিবাসী ও শরণার্থীদের নিয়ে নানা রকম শিক্ষণীয় মডেল প্রকল্প করেছে। জার্মান অভিবাসী ও শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও লোয়ার সাক্সেনি রাজ্য সরকারের সমাজ ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় মডেল প্রকল্পগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া জার্মানিতে আসা শরণার্থীদের ভাষাশিক্ষাসহ পেশাভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা করছে।

অনুষ্ঠানে আসা অতিথি ও সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মাহজাবিন আহমেদ লিপি।