ঘরের ভেতর ফুলবাগান
ঘরের কোণে কাচের ফুলদানিতে
দু–একটা তাজা গাঁদা—
রঙে আগুন, গন্ধে মাটি।
তুমি বোঝো না, প্রতিদিনই তুমি
একটা গোপন বাগানের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাও—
যার দরজাটা তোমার দৃষ্টির আড়ালেই রয়ে যায়।
ফুলের পাপড়ি শুধু দেখা যায়,
তার রঙের স্বাদ কি কেউ নেয়?
তোমার ঘরের বাতাসে
গোলাপের রং লেগে থাকে জিবে,
জুঁইয়ের গন্ধ জমে থাকে নিশ্বাসে—
তবু তুমি ভাব, এ তো সামান্য সাজসজ্জা!
কী আশ্চর্য, মানুষ কত কম দেখে!
স্ত্রীর মন—
একটা বৃষ্টি-নিভে-যাওয়া বিকেলের মতো,
যেখানে হঠাৎ ফোটে এক ধূলিধোয়া রক্তকরবী।
তুমি যদি হাতে ধরো কোমলভাবে,
যেমন মাটির শিশি ধরো,
যেমন রোদ্দুরের গন্ধ নাও,
যেমন পাতাঝরা পথে হাঁটতে হাঁটতে
এক মুহূর্ত থেমে থাকো—
তবে তার সে মন জেগে ওঠে।
তখন ঘরজুড়ে খুলে যায়
অলৌকিক কোনো রঙের পথ:
দরজার ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ে কবিতা,
চায়ের কাপের ধারে বসে গল্প,
রান্নাঘরের আলোয় ভেসে ওঠে উপন্যাস,
আর সন্ধ্যার নিশ্বাসে জন্ম নেয় নাটক—
যেন এক নারী,
একাই এক পৃথিবী—
স্বর্গের মতন।
তুমি শুধু প্রস্তুত করো তার মন,
যেমন বাগানের মাটি প্রস্তুত করা হয়—
পানি, আলো, কোমলতা আর নীরব বোঝাপড়া।
তুমি দেখবে, তোমার ঘর
নির্জন ইটের ঘর নয়—
এক বিশাল ফুলবাগান,
যার প্রতিটি পাপড়িতে, সুরে ও ছন্দে লেখা আছে
তোমারই নাম।
দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]