বড়দিনে নতুন সাজে ইতালি

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উদ্‌যাপন চলছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও বর্ণিল সাজে পুরোপুরি উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে খ্রিষ্টধর্মের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ইতালি। দেশটির ছোট-বড় শহর, উপাসনালয়, বিপণিবিতান ও ঘরবাড়িতে চলছে ব্যাপক আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জা।

ইতালির রাজধানী রোম, মিলান, ভেনিসসহ খ্রিষ্টানদের তীর্থস্থান ভ্যাটিক্যান সিটিতে ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে নানান আকারের ক্রিসমাস ট্রি। ঝলমলে আলোয় সাজানো হয়েছে ঐতিহাসিক গির্জা ও নগরকেন্দ্রগুলো।

ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা। দেশের প্রায় সব গির্জা ও খ্রিস্টান পরিবারে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি, জ্বালানো হচ্ছে মোমবাতি, তৈরি হচ্ছে বিশেষ কেক ও ঐতিহ্যবাহী খাবার। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে। শিশুদের আনন্দ দিতে সান্তা ক্লজের উপহার বিতরণ বড়দিনের আনন্দকে আরও রঙিন করে তুলবে।

দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর ২০২৫) ভেনিস ও ভিসেন্সা এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়। গির্জার দেয়াল ও আশপাশের বাড়িঘরে রংতুলির আঁচড়ে আঁকা হচ্ছে ধর্মীয় ও উৎসবঘন চিত্রকর্ম। ফুল, বেলুন ও আলোকসজ্জায় মোড়ানো হচ্ছে উপাসনালয় ও জনসমাগমস্থল।

বড়দিনকে কেন্দ্র করে শহরের পথে পথে বসেছে অস্থায়ী মেলা ও দোকান। এসব মেলায় মিলছে ক্রিসমাস সামগ্রী, ঐতিহ্যবাহী খাবার, চকলেট, ক্যান্ডি, শীতের পোশাকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্য। স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি এসব মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।

আভা নামে এক স্থানীয় খ্রিস্টান নারী জানান, বড়দিন তাঁদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এ উপলক্ষে ঘর সাজানো থেকে শুরু করে পরিবারের জন্য বিশেষ খাবার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর।

ইতালির সঙ্গে বড়দিনের ইতিহাস প্রায় দুই হাজার বছরের পুরোনো। খ্রিষ্ট প্রথম শতাব্দী থেকেই এই উৎসব দেশটির কৃষ্টি, দর্শন ও সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু ইতালিতেই নয়, বিশ্বব্যাপী বড়দিনের উৎসব ছড়িয়ে দিতে ইতালীয় সংস্কৃতির অবদান অনস্বীকার্য।

বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বড়দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকে। তাই বড়দিনের এই আলোকসজ্জার মতো শান্তি, সম্প্রীতি ও ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়—এমনটাই প্রত্যাশা যিশুপ্রেমী খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের।