পাপের নগরী লাস ভেগাসে নিশিযাপন
আমি যখন স্কুলের ছাত্রাবাসে থাকতাম, আমার একজন সিনিয়র বন্ধু অনেক রাতে তাস বা জুয়া খেলে রাতে ঘুমানোর জন্য আসত। ভোর হওয়ার আগেই চলে যেত। তাস বা জুয়া খেলা দেখিনি, খেলা তো দূরের কথা। কিন্তু এবার আমেরিকায় গিয়ে তাস বা জুয়া, তথা ক্যাসিনোর জন্য বিখ্যাত নেভাদা অঙ্গরাজ্যের শহর লাস ভেগাসে গিয়ে তাস খেললাম। তাসের আড্ডার মধ্যে খেলাম, ঘুমালাম। অবাক লাগছে? তাহলে শুনুন সেই গল্প।
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ান থেকে পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে বন্ধু মিজান আমাদের (আমি ও ভাতিজা সগির) নিয়ে এল লাস ভেগাসে। টেক্সাসের সান আন্তোনিও শহরে বসবাসরত বন্ধু (আগে জার্মানিতে ছিল) মনির আগেই লাস ভেগাসে এসে আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিল। হোটেলে এসে ফ্রেশ হয়ে মাহমুদা ভাবির দেওয়া খাবার খেতে গিয়ে দেখি, খাবারগুলো ভালো নেই, তাই রেস্তোরাঁয় খেলাম। ঘুরতে বের হলাম সন্ধ্যায়।
আলোঝলমলে রাতের রানি, যেখানে প্রতি রাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের জুয়া বা ক্যাসিনো খেলা হয়, সেই পাপের নগরী হিসেবে যার পরিচিতি, লাস ভেগাস—বারবনিতার মতো রাত যত গভীর হয়, তার রূপের আলোয় আলোকিত হয় শহর। পৃথিবীর সব বড় শহরের আদলে তৈরি হয়েছে ইমারত ও স্ট্যাচু। দুবাই, প্যারিস, মিসর, নিউইয়র্ক—সবই আছে। শহরটি নিজেকে বিশ্বে বিনোদনের রাজধানী হিসেবে তুলে ধরেছে এবং এটি মেগা ক্যাসিনো ও হোটেল-সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপের জন্য বিখ্যাত। এটি ব্যবসার সম্মেলনগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিনটি গন্তব্যের একটি এবং আতিথেয়তার শিল্পে বিশ্বের মধ্যে এক নেতৃত্ব প্রদানকারী শহর। বিশ্বের অন্য যেকোনো শহরের চেয়ে বেশি ফাইভ স্টার ডায়মন্ড হোটেল এ শহরে। আজ লাস ভেগাস বার্ষিকভাবে বিশ্বের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। শহরটিকে বলা হয় ‘পাপের নগরী’।
এ শহরের মেক্সিকোর সুন্দর নারীরা আকর্ষণীয় ও বাহারি পোশাকে রাস্তায় নৃত্য করেন। পর্যটকদের তাঁদের সঙ্গে ছবি তুললে টাকা দিতে হয়। শহরটিতে যে শুধু ক্যাসিনো রয়েছে তা নয়, রয়েছে বিশ্ব বিখ্যাত নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা যে হোটেলে ছিলাম, তার নিচতলায় ক্যাসিনোর মহা উৎসব চলে ২৪ ঘণ্টা। এখানে রাতের খাবারও খেলাম। আমরা সেখানে ক্যাসিনো খেললাম। তার মানে, পাপের নগরীতে খেলাম, খেললাম, নিশিযাপন করলাম। পরদিন আমি ও সগির ডালাসে চলে এলাম।