ড. ইউনূসকে অভিনন্দন এবং আমাদের প্রত্যাশা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানেরা বরাবরই হাই প্রোফাইল ছিলেন। তবে ১৯৯১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রকৃত রাষ্ট্রপ্রধানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার দিকে নজর দিলে বোঝা যায়, জ্ঞান, শিক্ষা বা দক্ষতায় তাঁদের গভীর খামতি ছিল। হাইস্কুল বা সাধারণ কলেজ পাস নেতা দিয়ে এ যুগের জটিল বৈদেশিক, অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক বা বৈজ্ঞানিক বা নতুন বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে নেতৃত্ব দেওয়া প্রায় অসম্ভব।
১৯৭১-৭২–এ তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন প্রথম সুশিক্ষিত, জ্ঞানী এবং মানবিক একজন। তাঁর শিক্ষা, জ্ঞান ও ব্যক্তিত্ব ছিল অতুলনীয়। তবে দ্রুতই হয়তো এ জন্য তাজউদ্দীন আহমদকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়।
তাজউদ্দীনের পর এই প্রথম সম্ভবত আমরা বাংলাদেশে বিচক্ষণ, জ্ঞানী ও সুশিক্ষিত মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাচ্ছি! যদিও ফখরুদ্দীন আহমদ মোটামুটি বছর দেড়েক ছিলেন। ভালো কাজ করে গেছেন। তবে তৎকালীন সেনাপ্রধান তখন ফখরুদ্দীন আহমদের ওপর যদি ছড়ি না ঘোরাতেন বা তাঁর সিদ্ধান্তগুলোয় প্রভাব বিস্তার না করতেন, তাহলে আরও ভালো কিছুই আমরা পেতাম।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিত্ব এবং জ্ঞানে এত পরিপূর্ণ যে তাঁর ওপর কেউ ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ পাবেন না। তাঁর নেতৃত্ব হবে ক্যারিশমেটিক ও যুগোপযোগী। তাঁর ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের মধ্যে যে একটা পরিমণ্ডল বা আবহ (Aura) আছে, যা আর কারও মাঝে এখন আর নেই।
যা হোক, যা বলতে চাই তা হলো, তাঁর কাছে আমার প্রত্যাশা অনেক। আমাদের সবারও তা–ই। তাঁকে যাতে আমরা পর্যাপ্ত সময় দিই। ভালো মানের পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। সেটি নিয়ে আরেক দিন লিখব। আরও একটি ব্যাপার বলে রাখতে চাই। সুশিক্ষিত নেতাই চারপাশে নতুন নেতা তৈরি করবেন।
এরপর যে রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন তিনি যেন সুশিক্ষিত হন, সেটি কী করে নিশ্চিত করা যায়?
পরিশেষে, ড. ইউনূস এবং তাঁর হেভিওয়েট নতুন উপদেষ্টাদের স্বাগত জানাই। চলুন নতুন কিছু করি, অনেক ভালো কিছু, যা হবে ন্যায়বিচারভিত্তিক, মেধাভিত্তিক, আদর্শ, মানবিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক। অভিনন্দন, স্যার ইউনূস!
লেখক: শাহ দিদারুল হাসান (এমবিএ, যুক্তরাজ্য), কানাডাপ্রবাসী
*দূর পরবাসে ছবি, লেখা ও ভিডিও পাঠাতে পারবেন দেশের পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]